পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Neyo বাংলার পুৱালারী ভাবিল, কোন বিধাতা তাহদের মনের মানুষকে আনিয়া এ ভাবে পথে দেখাইলেন । কন্যা মনে মনে এই বরের জন্য বিধাতার নিকট প্রার্থনা জানাইল । “পক্ষী হইলে সোনার বঁধুরে রাখিতাম পিঞ্জরে। পুষ্প হইলে প্ৰাণের বঁধুরে খোপায় রাখতাম তোরে। কাজল হইলে রাখতাম বঁধুরে নয়ান ভরিয়া। তোমার সঙ্গে যাইতাম দেশান্তরী হইয়া ৷” নব-যৌবনের নবরাগ এমনই দুৰ্জয় শক্তি বহন করে, লাজশীলার লাজের বঁধ ভাঙ্গিয়া দেয়, ঘরের বউকে কুলের বাহির করে, যাহার মুখে কথাটি নাই, তাহার মুখ হইতে সুধাবৃষ্টির মত অজস্ৰ কথা বাহির করে। যুবক একদিন সোনাইকে অতি ভয়ে ভয়ে অতি সন্তৰ্পণে বলিলেন, “কাল পদ্মদলের মধ্যে লিখিয়া যে চিঠিখানি তোমার সইয়ের হাতে দিয়াছি, তা’ কি তুমি দয়া করিয়া পড়িয়া দেখিয়াছ ?” সে চিঠি সোনাই পাইয়াছিল, বারংবার চোখের জলে ভিজিয়া চিঠিখানি পড়িয়াছিল, চিঠির অনেকগুলি আখর তাহার অশ্রুতে মুছিয়া গিয়াছিল। চিঠিতে লেখা ছিল :- “আমার নাম মাধব, আমি বাপ মায়ের এক ছেলে । আমার বাবার “লাখের জমিদারী” আছে, তুমি সম্মত হইলে কেয়াবনে সন্ধ্যাকালে থাকিও, সেখানে তুমি কাহার জন্য মালা গাথ ? যাহা হউক আমি সেখানে যাইয়া তোমার কাছে দুটি মনের কথা বলিব । তুমি কি তাহা শুনিবে না ? তোমার গায়ের রং পদ্ম-ফুলের মত, আমি তোমাকে অগ্নিপাটের শাড়ী দিব, তাহা পরিলে তোমাকে বেশ মানাইবে । আমার বাড়ীর পাছে বড় একটা ফুলের বাগান আছে, মালী গাছের পাতা দিয়া ‘টোপা’ বানাইয়া দিবে, আমি তোমার জন্য সেই টোপা ভরিয়া ফুল তুলিব। ফুলবাগানের কাছে যে দীঘিটা আছে, তাহার কালো জল কেমন নিৰ্ম্মল, তোমার ইচ্ছা হইলে আমরা দুজনে দীঘিতে সীতার কাটিব, দীঘিতে জলটুঙ্গী ঘর আছে, পদ্মগন্ধ