পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిసో বাংলার পুৱালারী “এখন মা, আমি তোমার কাছে কি বলিব ? সে কথা বলিতে কণ্ঠ রুদ্ধ হইতেছে, মাধব আমার একমাত্র পুত্ৰ-বংশের প্রদীপ, তাহার অভাবে এই বংশ নির্বংশ হইবে। এই পিতৃপিতামহাধিষ্ঠিত বহু পুরুষের রাজধানী অন্ধকার হইবে। তোমাকে আমি আর কি বলিব ? তুমি আমার পুত্রের প্ৰাণ রক্ষা করিতে পার। তাহাকে রক্ষা করার যদি অন্য কোন উপায় আমি উদ্ভাবন করিতে পারিতাম, তাহা হইলে এই নির্তান্ত হীন প্ৰস্তাব লইয়া তোমার কাছে উপস্থিত হইতাম না !” “শুন শুন বধু যদি কৃপা নাহি করা। অকালে আমার পুত্র যাবে যম ঘর দুরন্ত দুর্জন ভাবনা প্ৰতিজ্ঞা যে করে। তোমারে পাইলে ছাড়ি দিবে মাধবেরে। বংশের নিদান পুত্র এক বিনা নাই। তোমারে ছাড়িয়া যদি প্ৰাণ-পুত্ৰে পাই ।” নিজ প্ৰাণ দিয়া পতির উদ্ধার শ্বশুরের এই কথা শুনিয়া সোনাইএর চক্ষু হইতে অজস্র অশ্রুবিন্দু পড়িতে লাগিল। কিন্তু বধু দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞভাবে পরীক্ষণেই চােখের জল মুছিয়া ফেলিল, নিজের হাতে অসংস্কৃত কেশ পাশ বঁধিয়া শ্বশুরকে ভাওয়ালিয়া সাজাইতে আদেশ দিতে বলিল এবং একটি কোঁটায় জহর বিষের কয়েকটি বটিকা লইয়া স্বামী উদ্ধার করিতে রওনা হইল। দেওয়ান ভাবনা দরবারে বসিয়াছিলেন, যে মুহুৰ্ত্তে শুনিলেন, সোনাই রাজধানীতে পৌঁছিয়াছে, সেই মুহুর্তে তিনি তাহার ভাওয়ালিয়াতে গিয়া সোনাইএর সঙ্গে দেখা করিলেন,- তিনি দেখিলেন, এ মনুষ্য-মূৰ্ত্তি নহে, দৈবশাপে কোন দেবী ধরাতালে অবতীর্ণ হইয়াছেন। এই অপূর্ব সুন্দরীকে দেখিয়া দেওয়ান একবারে জ্ঞানহারা হইলেন।