পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীলা \OG গুণমুগ্ধ পীর ও ভক্ত কঙ্ক এই সময়ে বিপ্ৰপুর গ্রামে একজন ফকির পঞ্চ শিষ্য লইয়া আগমন করিলেন। একটা বড় বট গাছের তলা চাচিয়া তথায় তঁহার আস্তান স্থাপন করিলেন। নামডাকের সাধু-তিনি অনেক অলৌকিক কাণ্ড করিয়া সেখানকার লোকদিগের মনে বিস্ময় জন্মাইলেন, তীহাকে দর্শন করিবার জন্য বহু লোক আসিয়া তাহার দরগায় ভিড় করিতে লাগিল ; এমনই র্তাহার আশ্চৰ্য্য ক্ষমতা যে তিনি কোন ঔষধ পত্র না দিয়া ধূলিপড়া দিয়া কঠিন কঠিন রোগ সারাইতে লাগিলেন। কোন লোক কাছে আসিলে তিনি তাহাকে মনের কথা বলিবার কোন অবকাশ দিতেন না। তাহার মুখ-চােখের দিকে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া সে কিজান্য আসিয়াছে, তাহার বেদনা কোথায়-সকল বিবরণ নিজে বলিয়া দিয়া প্ৰতিকারের উপায় বলিয়া দিতেন। ধূলা দিয়া মোয়া তৈরী করিয়া শিশুদিগের হাতে দিতেন—তাহার অমৃত আস্বাদে, তাহারা বিস্মিত হইয়া যাইত। শত শত লোক তঁাহার দরগায় আসিত এবং যে যাহা মনে করিয়া আসিত, তাহার বাসনা সিদ্ধ হইত। নানা দিক হইতে স্তুপে স্তাপে চাউল, কলা, বাতাসা, মোরগ, ছাগল, পায়রা—তাহার কাছে লোকে সিন্নি দিত, কিন্তু পীর তাহার কোনটির কণা মাত্রও খাইতেন না, সমস্ত খাদ্য দরিদ্রাদিগকে বিলাইয়া দিতেন । মাঠে গাভী ছাড়িয়া দিয়া অপরাপর রাখাল বালকের সঙ্গে কঙ্ক গান গাহিত ; কখনও বঁাশী বাজাইত, সেই বঁাশীর সুর ও সুমিষ্ট গান-ডালে বসিয়া কোকিল শুনিত, তাহার পঞ্চম স্বর থামিয়া যাইত। পোষা জন্তুগুলি ঘাস খাওয়া ভুলিয়া সেই বঁাশী শুনিয়া তাহার কাছে আসিয়া চুপ করিয়া বসিয়া থাকিত। কুলবধুরা জল ভরিতে যাইয়া নদীর তীরে কলসী নামাইয়া রাখিয়া সেই বঁাশী শুনিত । পীর কঙ্কের গান শুনিলেন, তাহার বঁাশীর সুরে তঁহার চক্ষু হইতে অশ্রঞ্চ নামিয়া আসিল। কি মিষ্ট সেই বঁাশীর সুর ! কি মিষ্ট তাহার