পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VONS)

  • এদিক সেদিক চাহিয়া কোনরূপে পূজা সারিয়া এক যাইয়া খাইতে বসিলেন । অন্য দিন লীলাকে ডাকিয় তাহার নিকটে বসিতে বলেন, লীলা পরিবেশন করে এবং তিনি কত স্নেহের কথায় আদর করেন, আজ লীলাকে ডাকিলেন না, খুজিলেন না। কোনরূপে আহার শেষ করিয়া রান্না ঘরের বাহিরে যাইয়া একদৃষ্টি আকাশের একটা কোণ দেখিতে লাগিলেন। ঘরের দেয়ালের রন্ধ দিয়া লীলা সকলই দেখিতেছিল, তাহাকে খাওয়ার সময় একটিবার পিতৃ ডাকেন নাই, এই অভিমানে তাহার গণ্ড বাহিয়া অশ্রু পড়িতেছিল। সে ভয়ে তাতার পিতার মুখের দিকে চাহিতে পারে নাই । উদ্দাম ঝড়ের মুখে তরণীখানি বাধা ঘাটে যেরূপ কঁাপিতে থাকে,-লীলা অজানিত আশঙ্কায় ঘরে বসিয়া তেমনই কঁাপিতেছিল ।

পিতার আহার করার পর,-লীলা কঙ্কের জন্য ভাত তরকারী পরিচ্ছন্নভাবে সাজাইয়া একটা ঢাকনি দিয়া ঢাকিয়া সিকায় বুলাইয়া রাখিল, এবং রন্ধনশালা ত্যাগ করিয়া চলিয়া আসিল । এদিকে গৰ্গ দেখিলেন, রান্না ঘরে জন-প্ৰাণী নাই। তখন একটা কৌটা হইতে হলাহল বিষ বাহির করিলেন, এবং চোরের মত মৃদু পাদক্ষেপে ঘরে ঢুকিয়া সেই অন্ন ব্যঞ্জনেৰ থালা বিষ মিশ্ৰিত করিয়া দ্রুতপদে নিস্ক্রান্ত হইলেন। লীলা গর্গের প্রতি স্থির লক্ষ্য বদ্ধ করিয়াছিল। গর্গের অগোচরে সে র্তাহার এই অমানুষিক নিৰ্ম্মমকাণ্ড দেখিতে পাইয়া একবারে সংজ্ঞাশ্মন্যের মত রান্নাঘরের দ্বারে বসিয়া পড়িল । কঙ্কের গৃহত্যাগ সন্ধ্যায় সুরভি ও পাটলীকে লইয়া কঙ্ক গৃহে ফিরিল। কঙ্ক দেখিল বিমনা হইয়া লীলা অন্ন ব্যঞ্জনের থালাখানি সম্মুখে করিয়া বসিয়া আছে। সে লীলাকে বলিল-“আজ তোমার মুখ এরূপ মলিন কেন লীলা দেবী ?