পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা এই পুস্তকে যে কয়টি প্ৰাচীন যুগের বঙ্গ ললনার আখ্যায়িকা প্রদত্ত হইল তাহদের মধ্যে রাণী কমলা সম্বন্ধে আমরা দুইটি পল্লীগীতি পাইয়াছি, প্ৰথমটিতে র্তাহার নামে একটা বৃহৎ দীঘিকা খনন করিতে রাজাকে রাজ্ঞীর অনুরোধ, দীঘি খনিত হইলেও জল না পাওয়া যাওয়ায় শুকোদ্ধারের জন্য রাণীর আত্ম-বিসৰ্জন এবং বিরহ-বিধুর রাজার পত্নীশোকে মৃত্যুমুখে পতিত হওয়া। দ্বিতীয় গীতিকাটিতে সংক্ষেপে পূর্বোক্ত আখ্যায়িকা বর্ণিত হইয়াছে, কিন্তু উপসংহারে জঙ্গলবাড়ির ভুঞারাজা ঈশা খাঁ কর্তৃক শিশু রাজাকে বন্দী করিয়া লইয়া যাওয়ার বৃত্তান্ত এবং সুসুঙ্গের গাড়ো প্ৰজাদের অসমসাহসিক চেষ্টার ফলে কুমারকে উদ্ধার করার কথাও দেওয়া হইয়াছে। এই গীতিকাগুলির মধ্যে কাজলরেখা ও রাজা তিলকবসন্তের উপাখ্যান অনেকটা কল্পনামূলক । কাজলরেখা ধৰ্ম্মমতি শুকের মুখে উপদেশ শুনিতেছেন এবং সন্ন্যাসী কর্তৃক সূচি অদ্ভুতভাবে জীবনরক্ষা প্ৰভৃতি ঘটনাবলীর মধ্যে অপ্ৰাকৃত কথারই প্ৰাধান্য-বাস্তবতার সঙ্গে তাহদের সম্পর্ক অল্প । রাজা তিলক বসন্তের আতিথি-বেশী কৰ্ম্মপুরুষের অভিশাপে বনবাস, সুলা রাণীর স্পর্শ মাত্র আবদ্ধ ডিঙ্গার জলে ভাসা, ইষ্টমন্ত্র স্মরণ করিয়া রাণী নিজ দেহে কুণ্ঠ রোগের আবির্ভাব করা, রাজা তিলকবসন্তের প্রার্থী ব্ৰাহ্মণকে স্বীয় চক্ষু দান, রাণীর স্পর্শে চক্ষুপ্ৰাপ্তি ইত্যাদি অলৌকিক ঘটনার छएgांछछि । এই দুইটি কাহিনীতে নিছক কল্পনার খেলা দেখা যায়। কিন্তু বঙ্গীয় সৃষ্টির মধ্যে একটা বিষয় লক্ষ্য করিবার আছে। বাঙ্গালী যাহা কল্পনা দিয়া আরম্ভ করে ধীরে ধীরে তাহা গুছাইয়া সত্যকার বিষয়ে পরিণত করে। শিশু যেমন ঘরের বাহিরে ছুটিয়া খেলিয়া যখন ক্লান্তি বোধ করে তখন বাড়ীতে আসিয়া মা কি দিদিমাকে আঁকড়াইয়া ধরিয়া প্ৰকৃত বাৎসল্য উপভোগ না করা পৰ্য্যন্ত শান্তি পায় 岛