পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vao R পুৱনারী রাজকুমার শ্যাম রায়ের প্ৰেম, লৌকিক আচার ও সমাজ বিধি এ সকলের উপরে, তিনি বলিতেছেন ঃ-“হউক। কলঙ্ক - সেই কালি আমি কাজল করিয়া চোখে পরিব । শত্রুরা যদি নিন্দা করে, তাহাতে আমি তোমাকে ছাড়িতে পারিব না। প্ৰেম তো ধূলি মাটি নয় যে, লোকের কথায় আমি ছাড়িয়া দিব, জাতি আতি অকিঞ্চিৎকর ; প্রেমের মূল্যের সঙ্গে তাহার তুলনা হয় না । এই রাজ্য ছাড়িয়া আমি আর এক রাজ্যের রাজা হইব । জঙ্গলে বৃক্ষতলে আমি বাড়ী করিব, গজমতি ফেলিয়া দিয়া হাড়ের মালা পরিব, সুগন্ধি চন্দন ফেলিয়া আমি গায় ছাই মাখিব এবং দধি দুগ্ধ ছাড়িয়া বনের ফল খাইয়া তৃপ্ত হইব । তোমায় যদি পাই তবে এসকল কষ্ট আমার সুখের কারণ হইবে-জীবন সার্থক হইবে, উত্তম পরিচ্ছদের বদলে বাকল পরিয়া সুখী হইব “সায়রের লোনা পানি মুখ হৈল তিতা। ও ‘’ হইতে কুয়ার পানি শতগুণে মিঠ । থাকুক কলঙ্ক লো কন্যা লোক অপযশ । পাথর নিৎড়াইয়া দেখি পাই কিনা রস ॥” ডোম, কন্যা শেষে বলিল, “সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিয়াছে, আমার কুড়ে ঘরে এখনও সঁাজের বাতি জ্বালা হয় নাই, কঁাখের কলসী কঁাখে রহিয়াছে এখনও তাহাতে জল ভরা হয় নাই। আমার শাশুড়ীর বড় কোপন স্বভাব, গালি মন্দ দিবেন। আজ তুমি চলিয়া যাও। ঐ দেখ, সন্ধ্যার আকাশে পাখীগুলি অদৃশ্য হইয়া যাইতেছে, আমি এক আধার পথে কি করিয়া যাইব । কাল আমার স্বামী বঁাশ কাটিবার জন্য যাইবে।” কুমার বলিল, “আমি জলের ঘাটে তোমার কলসী ভরিয়া দিব !” “কিন্তু তুমি পরপুরুষ, আমি একলা নারী, ইহা কেমন করিয়া হয় ।” রাজকুমার-“আমি তোমাকে তোমার কুঁড়েতে পৌছাইয়া দিব।” “তা হ’লে তোমার কলঙ্ক পাড়াময় প্রচারিত হইবে।” রাজকুমার-“চল তাহা হইলে আমরা দুজনে পলাইয়া অন্য দেশে যাই।”