পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wa st ܘܦܘܠ শুনিলে গুণের কথা গায়ে আসে জর । তুমি কি করিবে কন্যা এমন গোয়ারের ঘর।” ডোমের মেয়ে এত দুঃখের মধ্যেও রাণীর অভিসন্ধি বুঝিয়া না হাসিয়া থাকিতে পারিল না, “আষাঢ়ের মেঘ যেমন রোদে যায় গলি” ; তাহার এত দুঃখ হাসিতে ভাসিয়া গেল, সে বলিল, “তাহা যাহাঁই বল, এস। দুইজনে ভাগ করিয়া রাজত্ব করি,- “ঢুই সতীনে বৈসা হেথা সুখে বাস করি। পাইয়াছি রাজত্ব পাট অল্পে কোন ছাড়ি ॥” এই উত্তরে রাণীর মুখ শুকাইয়া গেল। চােখের অশ্রু কিছুতেই বারণ মানে না । রাণী যাহা বলিয়াছিল-তাহা সত্য কথা-আসলে সে নিজের অধিকার শত কষ্ট সহিয়াও ছাড়িতে পারে না । “এত দুঃখ পাইয়া। তবু ছাড়তে না জুয়ায় । মড়ার কীবা যেমন মড়াতে লুকায় ॥” { ডোম কন্যা তাহার ভয় দেখিয়া ব্যথিত হইল। সে বলিল “সত্যু বলিতেছি, আমি এমন গোয়ার গোবিন্দের ঘর করিতে চাহি না । তুমিই রাজার পাটরাণী হইয়া থাক ; দেখ, আমার যে কন্যার-সজা রাজা বিবাহের জন্য আনিয়াছে, সেই অষ্ট অলঙ্কার ও সুন্দর “পবন-বাহার’ শাড়ী পরিয়া তুমি নূতন বধু সাজিয়া বসিয়া থাক। আমাকে একটা দাসীর বেশ পরাইয়া পলাইবার পথ দেখাইয়া দেও। কিন্তু আমার এই গুপ্ত পলায়নের কথা যেন কেউ জানিতে না পারে। চারিদিকে গণ্ডগোল, বাদ্য-ভাণ্ড,-ইহার মধ্যে আমার গতিবিধির দিকে কাহারও লক্ষ্য থাকিবে না ।” “হুমে ধূমে গোলমালে যাই পলাইয়া। গাবর রাজারে তুমি ফির্যা কর বিয়া ॥” শ্যাম রায়ের বড় ভাই বাড়ীতে আসিয়া কনিষ্ঠের এই দুৰ্দশার কথা শুনিলেন। র্তাহার পিতার এই দুর্ব্যবহারের কথা শুনিয়া তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হইলেন। অশ্বারোহণে তখনই গাবরের দেশে রওনা হইলেন।