পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলােৱ গুৱনাৱী ਕੇ ਫਸ প্রথম গীতিকা দীঘি কাটাইবার অনুরোধ আকবরের সময় ময়মনসিং “সূসুং দুর্গাপুরে” জানকীনাথ মল্লিক' নামে এক জমিদার ছিলেন ; তিনি সোমেশ্বর সিং নামক এক ক্ষত্ৰিয় সেনাপতির বংশে জন্মগ্রহণ করেন। র্তাহার সুন্দর পুরীর শ্যাম অঞ্চল চুম্বন করিয়া শুভ্ৰানীরা সোমাই নদী বহিয়া যাইত, সেই নদীর তরঙ্গের করতালি-শব্দে জাগিয়া উঠিয়া দুইপারের কোকিল কুহুধ্বনি করিয়া উঠিত এবং উষার অলক্তক রাগ আমগাছের মাথায় পড়িবার সঙ্গে সঙ্গেই কাকসকল কলরব করিয়া আকাশ-পথে লোকালয়ে উড়িয়া আসিয়া গৃহস্থের চালের উপর বসিত। রাজা জানকীনাথ ও তাহার স্ত্রী কমলা দেবী উভয়ে নানারূপে অসংলগ্ন ও অর্থহীন কথার আনন্দো “জলটুঙ্গী”ঘরে গ্রীষ্মের রাত্রি কাটাইয়া দিতেন ; সারারাত্রি সে কথা ফুরাইত না, সারারাত্রি সে আনন্দের প্রবাহ এক তিলের জন্য থামিত না, সারারাত্রি এক মুহুৰ্ত্ত র্তাহারা ঘুমাইতেন না, সারারাত্রি স্বর্ণ প্ৰদীপের সুবাসিত সলতার আলো এক মুহুর্তের জন্য নিভিত না। সেই “জলটুঙ্গী”ঘরের অবিদিতগতযামা নিশিথিনীর কথা তাহারা সারাদিন স্মরণ করিতেন এবং স্বপ্নভোরে মাতোয়ারা হইয়া থাকিতেন। একদিন কমলা দেবী রাজাকে বলিলেন, “তুমি তো কতবারই বল যে আমাকে তুমি ভালবাস। সত্যই যে ভালবাস তাহা আমি সন্দেহ করি না। কিন্তু তোমার কাছে আমার এই নিবেদন, এই ভালবাসার একটা চিহ্ন দেখাও।” রাজা বলিলেন, “আমাকে কি করিতে হইবে বল।”