পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SR বাংলার পুরনারী রাণী বলিলেন, “আমার একটা খেয়াল হইয়াছে, তাহা তোমায় পূর্ণ করিতে হইবে । আমি সাতদিন সাতরাত্ৰি কাজ করিয়া এক ‘টাকিয়া” সূতা কাটিব। সেই সূতার বেড় দিয়া যতটা জমি ঘেরা যায় ততটা জমিতে তুমি আমার নামে একটা দীঘি কাটিবে, তাহার নাম হইবে “কমলাসাগর।” চিরকাল এই রাজধানীর বক্ষে সেই দীঘি—আমার নাম বহন করিয়া আমার প্রাণপতির ভালবাসার পরিচয় দিবে।” রাজা বলিলেন, “তাহাই হইবে।” এই সময় জলটুঙ্গী ঘরের পূবদিক হইতে একটা গৃধ্ৰু শাণিত ছুরির মত তীব্র চিৎকারে আকাশ ভেদ করিয়া চলিয়া গেল-ঘরটা যেন মুহুৰ্ত্তের জন্য কঁাপিয়া উঠিল। রাণীর অভিযান শুঘেকাঙ্কার* দীঘি খনিত হইতে লাগিল, শত শত মজুর রাতদিন কাটিতেছে ;- যেন তাহারা পাতালপুরীতে অভিযান করিবে, দীঘির-খাদ গভীর হইতে গভীরতর হইতে চলিল, কিন্তু এক ফোটা জল উঠিল না । রাজা চিন্তিত হইয়া পড়িলেন, সভাসদ পণ্ডিতেরা বলিলেন—“কোন দীঘি খনন আরম্ভ করিয়া তাহাতে জল না। উঠা পৰ্যন্ত কাজ বন্ধ রাখিলে, দীঘি-স্বামীর চৌদ্দ পুরুষ নরকস্থ হইবেন।” যাহা দাম্পত্য প্রেমের আনন্দে একটা সখের বশে জানকীনাথ করিতে বসিয়াছিলেন, তাহা এইবার দারুণ দুশ্চিন্তার বিষয় হইয়া পড়িল । “চোঁদ পুরুষ নরকস্থ হইবে”— কি গুরুতর অভিশাপ ! এদিকে শত-শত সহস্ৰ-সহস্র মজুর হয়রাণ হইয়া গেল। রাজা প্ৰাণদণ্ডের ভয় দেখাইলেন ;

  • শুষ্ক দীঘিতে জল সঞ্চার করাকে শুষ্কোদ্ধার বলে