পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਫ਼ দ্বিতীয় গীতিক কমলারাণী চলিয়া গিয়াছেন, পত্নীবিয়োগ-বিধুর রাজা জানকী নাথ আহার নিদ্রা ছাড়িয়া দিয়াছেন। এমন যে দুধে আলতার বর্ণ, তাহাতে কালী পড়িয়াছে ; তাহার দেহ অৰ্দ্ধেক হইয়াছে, সৰ্ব্বদা বার-বাঙ্গলা ঘরে কমলা সায়রের দিকে তাকাইয়া থাকেন এবং চােখের জলে অবিরত মুখমণ্ডল প্লাবিত হয়। “রাণী আমায় ফেলিয়া গিয়াছ। তোমাকে ছাড়া আমি থাকিতে পারিতেছি না, আর দুধের ছেলেকে কার কাছে দিয়া গেলে, আমি তাহাকে কিরূপে পালন করিব ।”-সৰ্ব্বদা এইভাবে বিলাপ করেন। কখনও কখনও, যেমন কোন অন্ধ ঘরময় তাহার লাঠি খুজিয়া বেড়ায়, তেমনই রাজা বিছানা হাতড়াইয়া কি খুজিতে থাকেন। সেই গৃহে রাণীর নিশ্বাসের সুরভি আছে, এবং শয্যায় সেই স্পর্শ আছে। একদিন রাজা শয্যায় শুইয়া ‘হায় রাণী”। “হায় কমলা’-বলিয়া স্বপ্নঘোরে। কঁদিতেছেন, এমন সময়ে তিনি দেখিলেন, যেন রাণী দীঘির জল হইতে উঠিয়া তাহার শয্যায় বসিলেন ; রাণী তাহার গায়ে হাত বুলাইতে লাগিলেন ; সেই আদরে রাজার চক্ষু হইতে টপ টপ করিয়া জল পড়িতে व्लांब्लि । রাণী বলিলেন, “দীঘির পারে। পূব-দুয়ারী একটি ঘর তৈরি করে রােখ, যখন প্রতিদিন দাসদাসীরা কুমারকে সঁাজের সময় বেড়াইয়া লইয়া ঘুম পাড়াইতে আসিবে, তাহাদিগকে এই আদেশ দিও, খোকা ঘুমাইলে তাহাকে সেই নুতন ঘরে যেন শয্যায় রাখিয়া চলিয়া যায়। আমি তঁহাকে নিশিরাত্রে যাইয়া স্তন্য পান করাইয়া আসিব । আমার স্তন্য পান করিয়া শিশু অল্পসময়ের মধ্যে বাড়িয়া উঠিবে।” রাণীর স্বর তখনও রাজার কর্ণে ছিল, তিনি সেই সুকণ্ঠের স্বর শুনিতে শুনিতে যেন স্বর্গের আনন্দে বিভোর ছিলেন, এমন সময় সহসা ঘুম ভাঙ্গিয়া