পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRo বাংলার পুরনারী শোকাহত রাজা জানকীনাথ এই ভাবে প্ৰাণ ত্যাগ করিলেন। রাজা অতি ধাৰ্ম্মিক এবং প্রজাবৎসল ছিলেন। র্তাহার অকাল মৃত্যুতে সমস্ত রাজ্যময় শোকের বন্যা বহিয়া গেল । ठे थे। শিশু রঘুনাথকে উজির নাজির ও মন্ত্রীমণ্ডলী প্ৰাণ-প্রিয় জ্ঞানে পালন করিতে লাগিলেন, তাহারা প্ৰতিনিধি-স্বরূপ রাজ্য শাসন করিলেন। শিশুকুমারের প্রতি প্ৰজাদের আন্তরিক দরদবশতঃ তাহারা মুক্ত হস্তে রাজস্ব দিতে লাগিল, ফলে রাজ্যের আয় বাড়িয়া গেল। রঘুনাথের যখন পাঁচ বৎসর বয়স, তখন মন্ত্রীরা তাহাকে সিংহাসনে অভিষিক্ত করিলেন । তীর্থোদকে স্নান করাইয়া, চন্দন কুন্ধুমে অঙ্গরাগ করাইয়া, কস্তুরির তিলক কপালে পরাইয়া, কজ্জলে চক্ষু রঞ্জিত করিয়া মন্ত্রীরা তাহার মাথায় শ্বেত ছত্ৰ ধরিলেন ; কেহ কেহ স্বর্ণ দণ্ড চামর ব্যজন করিতে লাগিলেন এবং অন্তঃপুরিকার চােখের জল মুছিয়া জয় জয়কার ও শঙ্খধ্বনি করিতে লাগিলেন ; এদিকে যন্ত্রী-তন্ত্রী ও গায়কেরা চােখের জল মুছিয়া উৎসবে যোগদান করিলেন, “আমাদের কুমারকে স্বৰ্গগত। রাণী স্তন্য দিয়া যাইতেন এবং এই ছেলে রাজার চোখের তারা ছিল”-এই বিলাপ ধ্বনির সঙ্গে উৎসবের উচ্চ কলরব শোনা যাইতে লাগিল । দক্ষিণে জঙ্গলবাড়ী নামক নগর তখন একটা প্ৰসিদ্ধ স্থান ছিল, সেখানে দেওয়ান ইশা খাঁ রাজত্ব করিতেন। ইশা খাঁর দোর্দণ্ড প্ৰতাপ সকলের বিদিত ছিল। তিনি দিল্লীশ্বর আকবরের সঙ্গে বহুবার যুদ্ধ করিয়াছিলেন! ভূঞা রাজাদের মধ্যে তিনি ও প্রতাপাদিত্য ছিলেন সর্বপ্রধান। ইশা খাঁ মস্ত বড় পালোয়ান ছিলেন ; তিনি হাতীর শূড় ধরিয়া চক্রাকারে তাহাকে আকাশে ঘুৱাইতে পারিতেন, তিনি যখন রোষাবিষ্ট হইয়া গর্জন করিতেন, তখন মনে হইত আকাশেয় মেঘ ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে এবং যখন নদী-তটে