পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাণী কমলা S হাঁটিয়া বেড়াইতেন, তখন তাহার পাদক্ষেপে নদীর পাড় কঁাপিয়া ऐठेिऊ । কিন্তু রাজা জানকীনাথ ছিলেন ইশা খাঁর শত্ৰু । উভয়ে বহুবার লড়াই করিয়াছেন, কিন্তু কে বড়, কে ছোট, তাহা লোকে বুঝিতে •iांब्रिड ना । জঙ্গলবাড়ী হইতে ইশা খাঁ তাহার চির বৈরী জানকীনাথের মৃত্যুসংবাদ শুনিলেন। তিনি তঁাহার অজেয় সৈন্য সামন্ত লইয়া সুসুঙ্গ দুর্গাপুরের দিকে রওনা হইয়া আসিলেন । অকস্মাৎ প্লাবনের মত আসিয়া ইশা খার সৈন্যগণ সুসুঙ্গের দুর্গ অবরোধ করিল। তিন মাস কাল দেওয়ান ইশা খাঁ দুৰ্গাপুর রাজধানী অবরোধ করিয়া রহিলেন । তিনি ছিলেন আতি ফন্দীবাজ লোক, বিনা সংবাদে এবং এরূপ দ্রুতভাবে ইশা আসিয়া পড়িয়াছিলেন যে দুর্গাপুরের লোক পূর্বে র্তাহার অভিযান টের পাইয়া প্ৰস্তুত হইতে পারে নাই। তিন মাস কালের মধ্যে রাজধানীর দুর্গের রসদ ফুরাইয়া গেল এবং এক অশুভ মুহুর্তে ইশা খার সৈন্য অনাহার-ক্লিষ্ট রাজসৈন্যদিগকে হাঁটাইয়া দিয়া অতর্কিত ভাবে রাত্রিকালে শিশু রঘুনাথকে হরণ করিয়া লইয়া গেল। সমস্ত দুর্গাপুর অঞ্চলে হুলস্থূল পড়িয়া গেল। “আমাদের প্রাণের কুমারকে চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছে, এই পুরীর আর কি রহিল ? রাজার ঘরের বাতি নিভাইয়া দিয়াছে,” এই বলিয়া কেহ বুক চাপড়াইয়া কাঁদিতে লাগিল, কেহ নদীতীরে, কেহ রাজপথে ধূলায় লুটিয়া গড়াগড়ি যাইতে লাগিল, কেহ কেহ ক্রুদ্ধনেত্রে দূর দক্ষিণ-মুলুকের দিকে দৃষ্টিপাত করিতে লাগিল । তাহারা রাজাকে উদ্ধার করিবার জন্য সর্বস্ব পণ করিয়া বসিল । ইহার মধ্যে উত্তর পাহাড়ে রাজার গাড়ো প্ৰজারা এই দুঃসংবাদ শুনিতে পাইল । বারুদে অগ্নি সংযোগ করিলে যেরূপ হয়-তাহারা সংবাদ শুনিয়া তেমনই জ্বলিয়া উঠিল,-ক্ষিপ্তভাবে সমস্ত পাহাড়ময় পাগলের মত কি করিবে, তাহার উপায় স্থির করিতে ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল ।