পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাজল রেখা NOS শুক বলিল, “তোমার দারিদ্র্য শীঘ্রই দূর হইবে। সন্ন্যাসী দত্ত ‘শ্ৰী আংটি বাজারে যাচাই করিয়া বিক্রয় করিয়া ফেল এবং উদ্ধৃত্তি টাকা দিয়া তুমি ব্যবসা আরম্ভ করা, তোমার দিন ফিরিবে।” অবস্থার পরিবর্তন-কিন্তু কন্যাকে লইয়া বিপদ শ্ৰী আংটির দাম যাহা হইল, তাহার কতকাংশ দিয়া তিনি বাড়ী মেরামত করিলেন এবং বাকী টাকা দিয়া তিনি ব্যবসায়ে নামিলেন। শুভ দিনে সব দিক দিয়াই সুবিধা হইল। শুক বলিয়াছিল—“তুমি এক বৎসর ব্যবসা করিয়া যাহা পাইবে, তাহাতে বার বৎসর রাজার হালে জীবন যাপন করিতে পারিবো।” বস্তুতঃ তাহাই হইল। সদাগর পুনরায় ধনী হইলেন, এবং পূর্ববৎ ধনধান্য সমন্বিত, কিঙ্কর ও দাসদাসী পরিবৃত গৃহে-পরমসুখে বাস করিতে লাগিলেন। ‘কাম টুঙ্গী” “জল টুঙ্গী ঘর’ ও ‘ময়ূরপন্থী’ ও ‘হাঙ্গরমুখী জাহাজগুলি সমস্তই যেরূপ ছিল, তেমনই হইল। কিন্তু কন্যার বার বৎসর পার হইয়া গেল, অথচ কোন বর জুটিতেছে না। এই এক দুঃখ তাহার সমস্ত সুখ মাটী করিল। সদাগর বহু অনিদ্ররাত্রি দুশ্চিন্তায় কাটাইলেন, সোণার ঘর ও মতির থাম তাহাকে কোন সুখ দিতে १iांद्रिब्ल ना । অবশেষে তিনি শুকের কাছে যাইয়া তাহার দুলালী কন্যা কাজলরেখার বিবাহ সম্বন্ধে উপদেশ জিজ্ঞাসা করিলেন। শুক বলিল, “এ কন্যাকে লইয়া তোমার আরো অনেক কষ্ট আছে। আমার কথা যদি শোন, তুমি ইহাকে বনবাস দিয়া আইস ; একটি মৃত কুমারের সঙ্গে ইহার বিবাহ হইবে ; ইহার কপালের বিড়ম্বনা কে ঘুচাইবে ? যদি কন্যার প্রতি স্নেহবশতঃ তুমি আমার উপদেশ না লও, তবে তোমার কন্যা ও তুমি ঘোর বিপদে পড়িবে।” সদাগর তৃষ্ণায় মৃতপ্ৰায় হইয়া শুকের নিকট এক ফোটা জল চাহিতে গিয়াছিলেন, কিন্তু যেন পাইলেন একটা তপ্ত লৌহের মুষল। অনেক