আমার লেখায়[১] “প্রদোষ” শব্দের প্রয়ােগে অর্থের ভুল ঘটেছে, সেই নিন্দা[২] কালনের জন্য তােমার পত্রিকায় কিছু প্রয়াস[৩] দেখা গেল। আমার প্রতি তােমাদের শ্রদ্ধা আছে জেনেই আমি বলচি এর কোনাে প্রয়ােজন ছিল না। অজ্ঞতা ও অনবধানতায় মৃত ও অন্যকৃত দোষে অনেক ভুল আমার লেখায় থেকে গেছে। মেনে নিতে কখনাে কুণ্ঠিত হই নে। পাণ্ডিত্যের অভাব এবং অন্য অনেক ত্রুটি সত্ত্বেও সমাদরের যােগ্য যদি কোনাে গুণ আমার রচনায় উদ্বৃত্ত থাকে তবে সেইটের পরেই আমার একমাত্র ভরসা; নির্ভুলতার পরে নয়।
রাত্রির অল্পান্ধকার উপক্রমকেই বলে প্রদোষ, রাত্রির অন্ধকার পরিশেষের বিশেষ কোনাে শব্দ আমার জানা নেই। সেই কারণে প্রয়ােজন উপস্থিত হলে ওই শব্দটাকে উভয় অর্থেই ব্যবহার করবার ইচ্ছা হয়। এমনি করেই প্রয়ােজনের তাগিদে শব্দের অর্থবিস্তৃতি ভাষায় ঘটে থাকে। সংস্কৃত অভিধানে যে শব্দের যে অর্থ, বাংলা ভাষায় সর্বত্র তা বজায় থাকে নি। সেই ওজর করেই আলােচিত লেখাটিকে যখন গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করব তখন প্রদোষ কথাটার পরিবর্তন করব না এই রকম স্থির করেচি। সম্ভবত এই অর্থে এই শব্দটার প্রয়ােগ আমার রচনায় অন্যত্রও আছে এবং ভাবীকালেও থাকবে। রাত্রির আরম্ভে ও শেষে যে আলো-অন্ধকারের সংগম, তার রূপটি একই, এবং একই নামে তাকে ডাকবার দরকার ঘটে। সংস্কৃত ভাষায় সন্ধ্যা শব্দের দুই অর্থই আছে কিন্তু বাংলায় তা চলবে না।
আমার লেখায় এর চেয়ে গুরুতর ভুল, ইস্কুলের নীচের ক্লাসে পড়ছে এমন ছেলে চিঠি লিখে একবার আমাকে জানিয়েছিল। আমি মিথ্যা তর্ক করি নি; তাকে সাধুবাদ দিয়ে স্বীকার করে নিয়েচি।– অপবাদের ভাষা ও ভক্তি