পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 • বাংলা শব্দতত্ত্ব মনে রাখা উচিত যে, তাহারা ভাষায় যাহা আছে তাহারই প্রয়োগ প্রকৃতি গঠনপ্রণালীর নিয়মাদি কিরূপ তাহ ব্যাখ্যা করিবেন মাত্র ; কেহ কিছু গড়িবেন না । -- শিক্ষার বিস্তারের জন্য রচনার ভাষা যত কথিত ভাষার নিকটবর্তী হইবে ততই স্বফল ফলিবে । ভাষা অর্থে যদ্বারা ভাষণ করা যায়, স্বতরাং তাহা কথিত ভাষার নিকটবর্তী হওয়াই উচিত । “তৎপরে শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় বলেন, হীরেন্দ্রবাবু যাহা বলিয়াছেন, প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়ে তদতিরিক্ত বলিবার আর কিছুই নাই ; নিঃশেষ করিয়া সকল কথার উত্তর দিয়াছেন।••• ভাষা যে আমরা নিজে ইচ্ছা করিলে গড়িতে পারি ভাঙিতে পারি এরূপ নহে। সংস্কৃতের সহিত বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ সহজে বুঝা যায়, কিন্তু কোথায় কোথায় কিরূপ পার্থক্য আছে সেগুলি লক্ষ করাই এখন আবশ্যক । তবেই ইহার বর্তমান আকৃতি জানা যাইবে, তবেই ব্যাকরণ গঠনের চেষ্ট হইতে পারিবে । আমারও মনে হয় যে, বাংলাব্যাকরণ সংস্কৃতমূলক হইবে কেন। সংস্কৃতশব্দের বাহুল্য বাংলায় বেশি বলিয়াই ভাষার গঠনদিও সংস্কৃতব্যাকরণানুসারে করিতে হইবে ? বাংলাভাষার প্রকৃত কাঠামো যে সম্পূর্ণ তফাত ইহা না বুঝিলে চলিবে কেন । তবে সংস্কৃতব্যাকরণ আলোচনা করা আবগুক, নতুবা আমরা ঠিক পথে চলিতে পারিব না।” সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাহার বক্তব্যে বলেন : •••আজকার প্রবন্ধের আলোচনায় দেখা গেল, মত দ্বিবিধ হইয়াছে। সংস্কৃতানুসারে ব্যাকরণ আর বাংলাভাষার প্রকৃতিগত ব্যাকরণ । উভয়ের সামঞ্জস্য আবশ্যক আমার নিজের মনের ঝোক শাস্ত্রী-মহাশয়ের মতের সঙ্গেই মিলে । লিখিত ভাষা ও কথিত ভাষায় প্রভেদ যত কম থাকে ততই ভালো । পরিষদের পঞ্চম মাসিক অধিবেশনে ( ১২ আশ্বিন ১৩০৮ ) রবীন্দ্রনাথ ‘বাংল। কৃৎ ও তদ্ধিত প্রবন্ধ পাঠ করেন। ব্যোমকেশ মুস্তফী মহাশয় এই প্রবন্ধের ১. ক্রষ্টব্য বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের কার্ধবিবরণ—১৩y • (সা. প. প.—পৃ. ১lv•-১J• ) ।