পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 o শৰাতত্ত্ব টাটুক-টাটুকা বলিলে টাটুক। শব্দকে বিশেষ করিয়া নিশ্চয়, করিয়া বলা যায়। চার-চার, তিন-তিন এগুলিও পূর্ববৎ । চার চার পেয়াদা আসিয়া হাজির, অর্থাৎ নিতান্তই চারটে পেয়াদা বটে। গলায় গলায় ( আহার ), কানে কানে ( কথা )—ইহাও পূর্ব শ্রেণীর; অর্থাৎ অত্যন্তই গলা পৰ্য্যন্ত পূর্ণ; নিতান্তই কানের নিকটে গিয়া কথা । “হাতে হাতে” (ফল, বা ধরা পড়া ) বোধ করি স্বতন্ত্রজাতীয়। বোধ করি তাহার অর্থ এই, যে, যেমনি হাত দিয়া কাজ করা, অমনি সেই হাতেই ফল প্রাপ্ত হওয়া, যে হাতে চুরি করা সেই হাতেই ধৃত হওয়া । নিজে নিজে, আপনি-আপ নি তখনি তখনি—পূৰ্ব্বানুরূপ । অর্থাৎ বিশেষরূপে নিজেই, আপনিই আর কেহই নহে, বিলম্বমাত্র না করিয়া তৎক্ষণাৎ । “সকাল সকাল” শব্দও বোধ করি এই জাতীয়, অর্থাৎ নিশ্চয়রূপে দ্রুতরূপে সকাল । জল জল, চুর চুর, ঘুরঘুর, টল্‌ টল, নড়, নড়, এগুলি জলন চূর্ণন, ঘূর্ণন, টলন, নৰ্ত্তন শব্দজাত ; এগুলিতেও প্রকর্ষভাব ব্যক্ত হইতেছে । বাংলা অনেকগুলি শব্দদ্বৈতে দ্বিধা, ঈষদূনতা, মৃদুতা, অসম্পূর্ণতার ভাব ব্যক্ত করে। যথা—যাব যাব, উঠি উঠি। মেঘ-মেঘ, জর-জব, শীত-শীত, মর-নর, পড়ো-পড়ে, ভর-ভরা, ফাক-ফাকা, ভিজে-ভিজে, ভাসা-ভাসা, কাদো-কাদো, হাসি-হাসি ।