পাতা:বাইবেল পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম.djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপুস্তক।
[৪;১৪—৫;৩১।

অসহ্য। ১৪দেখ, অদ্য তুমি ভূতল হইতে আমাকে তাড়াইয়া দিলে, আর তোমার দৃষ্টি হইতে আমি লুক্কায়িত হইব। আমি পৃথিবীতে পলাতক ও ভ্রমণকারী হইব, আর আমাকে যে পাইবে, সেই বধ করিবে। ১৫তাহাতে সদাপ্রভু তাহাকে কহিলেন, এই জন্য কয়িনকে যে বধ করিবে, সে সাত গুণ প্রতিফল পাইবে। আর সদাপ্রভু কয়িনের নিমিত্ত এক চিহ্ন রাখিলেন, পাছে কেহ তাহাকে পাইলে বধ করে।

১৬পরে কয়িন সদাপ্রভুর সাক্ষাৎ হইতে প্রস্থান করিয়া এদনের পূর্ব্বদিকে নোদ দেশে বাস করিল। ১৭আর কয়িন আপন স্ত্রীর পরিচয় লইলে সে গর্ব্ভবতী হইয়া হনোককে প্রসব করিল। আর কয়িন এক নগর পত্তন করিয়া আপন পুত্ত্রের নামানুসারে তাহার নাম হনেক রাখিল। ১৮হনোকের পুত্ত্র ঈরদ, ঈরদের পুত্ত্র মহূয়ায়েল, মহূয়ায়েলের পুত্ত্র মথুশায়েল ও মথূশায়েলের পুত্ত্র লেমক। ১৯লেমক দুই স্ত্রী গ্রহণ করিল, এক স্ত্রীর নাম আদা, অন্যার নাম সিল্লা। ২০আদার গর্ব্ভে যাবল জন্মিল, সে তাম্বুবাসী পশুপালকদের আদিপুরুষ ছিল। ২১তাহার ভ্রাতার নাম যুবল; সে বীণা ও বংশীধারী সকলের আদিপুরুষ ছিল। ২২আর সিল্লার গর্ব্ভে তুবল-কয়িন জন্মিল, সে পিত্তলের ও লৌহের নানা প্রকার অস্ত্র গঠন করিত; তুবল-কয়িনের ভগিনীর নাম নয়মা। ২৩আর লেমক আপন দুই স্ত্রীকে কহিল,

আদে, সিল্লে, তোমরা আমার কথা শুন,
লেমকের ভার্য্যাদ্বয়, আমার বাক্যে কর্ণপাত কর;
কারণ আমি আঘাতের পরিশোধে পুরুষকে,
প্রহারের পরিশোধে যুবাকে বধ করিয়াছি।
২৪যদি কয়িনের বধের প্রতিফল সাত গুণ হয়,
লেমকের বধের প্রতিফল সাতাত্তর গুণ হইবে।

২৫আর আদম পুনর্ব্বার আপন স্ত্রীর পরিচয় লইলে তিনি পুত্ত্র প্রসব করিলেন, ও তাহার নাম শেথ রাখিলেন। কেননা [তিনি কহিলেন,] কয়িন কর্ত্তৃক হত হেবলের পরিবর্ত্তে ঈশ্বর আমাকে আর এক সন্তান দিলেন। ২৬পরে শেথেরও পুত্ত্র জন্মিল, আর তিনি তাহার নাম ইনোশ রাখিলেন। তৎকালে লোকের সদাপ্রভুর নামে ডাকিতে আরম্ভ করিল।

আদম-বংশের বিবরণ।

আদমের বংশাবলি-পত্র এই। যে দিন ঈশ্বর মনুষ্যের সৃষ্টি করিলেন, সেই দিনে ঈশ্বরের সাদৃশ্যেই তাঁহাকে নির্ম্মাণ করিলেন; পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাঁহাদিগের সৃষ্টি করিলেন; এবং সেই সৃষ্টিদিনে তাঁহাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিয়া আদম, এই নাম দিলেন। পরে আদম এক শত ত্রিশ বৎসর বয়সে আপনার সাদৃশ্যে ও প্রতিমূর্ত্তিতে পুত্ত্রের জন্ম দিয়া তাহার নাম শেথ রাখিলেন।

শেথের জন্ম দিলে পর আদম আট শত বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্র
কন্যার জন্ম দিলেন।

সর্ব্বশুদ্ধ আদমের নয় শত ত্রিশ বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

শেথ এক শত পাঁচ বৎসর বয়সে ইনোশের জন্ম দিলেন। ইনোশের জন্ম দিলে পর শেথ আট শত সাত বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। সর্ব্বশুদ্ধ শেথের নয় শত বার বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

ইনোশ নব্বই বৎসর বয়সে কৈননের জন্ম দিলেন। ১০কৈননের জন্ম দিলে পর ইনোশ আট শত পনের বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ১১সর্ব্বশুদ্ধ ইনোশের নয় শত পাঁচ বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

১২কৈনন সত্তর বৎসর বয়সে মহললেলের জন্ম দিলেন। ১৩মহললেলের জন্ম দিলে পর কৈনন আট শত চল্লিশ বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ১৪সর্ব্বশুদ্ধ কৈননের নয় শত দশ বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

১৫মহললেল পঁয়ষট্টি বৎসর বয়সে যেরদের জন্ম দিলেন। ১৬যেরদের জন্ম দিলে পর মহললেল আট শত ত্রিশ বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ১৭সর্ব্বশুদ্ধ মহললেলের আট শত পঁচানব্বই বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

১৮যেরদ এক শত বাষট্টি বৎসর বয়সে হনোকের জন্ম দিলেন। ১৯হনোকের জন্ম দিলে পর যেরদ আট শত বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ২০সর্ব্বশুদ্ধ যেরদের নয় শত বাষট্টি বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

২১হনোক পঁয়ষট্টি বৎসর বয়সে মথূশেলহের জন্ম দিলেন। ২২মথূশেলহের জন্ম দিলে পর হনোক তিন শত বৎসর ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিলেন, এবং আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ২৩সর্ব্বশুদ্ধ হনোক তিন শত পঁয়ষট্টি বৎসর রহিলেন। ২৪হনোক ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন। পরে তিনি আর রহিলেন না, কেননা ঈশ্বর তাঁহাকে গ্রহণ করিলেন।

২৫মথূশেলহ এক শত সাতাশী বৎসর বয়সে লেমকের জন্ম দিলেন। ২৬লেমকের জন্ম দিলে পর মথূশেলহ সাত শত বিরাশী বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন। ২৭সর্ব্বশুদ্ধ মথূশেলহের নয় শত ঊনসত্তর বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু হইল।

২৮লেমক এক শত বিরাশী বৎসর বয়সে পুত্ত্রের জন্ম দিয়া তাহার নাম নোহ [বিশ্রাম] রাখিলেন; ২৯কেননা তিনি কহিলেন, সদাপ্রভু কর্ত্তৃক অভিশপ্ত ভূমি হইতে আমাদের যে শ্রম ও হস্তের ক্লেশ হয়, তদ্বিষয়ে এ আমাদিগকে সান্ত্বনা করিবে। ৩০নোহের জন্ম দিলে পর লেমক পাঁচ শত পঁচানব্বই বৎসর জীবৎ থাকিয়া আরও পুত্ত্রকন্যার জন্ম দিলেন।

৩১সর্ব্বশুদ্ধ লেমকের সাত শত সাতাত্তর বৎসর বয়স হইলে তাঁহার মৃত্যু
4