পাতা:বাইবেল পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়ম.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৫;৩২—৭;১৬।]
আদিপুস্তক।

হইল। ৩২পরে নোহ পাঁচ শত বৎসর বয়সে শেম, হাম ও যেফতের জন্ম দিলেন।

নোহ ও জলপ্লাবনের বৃত্তান্ত

এইরূপে যখন ভূমণ্ডলে মনুষ্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাইতে লাগিল ও অনেক কন্যা জন্মিল, তখন ঈশ্বরের পুত্রের মনুষ্যদের কন্যাগণকে সুন্দরী দেখিয়া, যাহার যাহাকে ইচ্ছা, সে তাহাকে বিবাহ ৩ করিতে লাগিল। তাহাতে সদাপ্রভু কহিলেন, আমার আত্মা মনুষ্যদের মধ্যে নিত্য অধিষ্ঠান করিবেন না, তাহাদের বিপথগমনে তাহার। মাংস মাত্র; পরস্তু তাহাদের সময় এক শত বিংশতি বৎসর হইবে। তৎকালে পৃথিবীতে মহাবীরগণ ছিল, এবং তৎপরেও ঈশ্বরের পুত্রের মনুষ্যদের কস্তাদের কাছে গমন করিলে তাহীদের গর্ত্তে সন্তান জন্মিল, তাহারাই সেকালের প্রসিদ্ধ বীর। আর সদাপ্রভু দেখিলেন, পৃথিবীতে মনুয্যের দুষ্টত। বড়, এবং তাহার অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ। তাই সদাপ্রভু পৃথিবীতে মনুষ্যের নির্মাণ প্রযুক্ত অনুশোচনা করিলেন, ও মনঃপীড়া পাইলেন। আর সদাপ্রভু কহিলেন, আমি যে মনুষ্যকে স্বষ্টি করিয়াছি, তাহাকে ভূমণ্ডল হইতে উচ্ছিন্ন করিব; মনুষ্যের সহিত পশু, সরীস্বপ জীব ও আকাশের পক্ষীদিগকেও উচ্ছিন্ন করিব; কেনন তাহদের নির্ম্মাণ প্রযুক্ত আমার ৮ অনুশোচনা হইতেছে। কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন।


নোহের বংশ-বৃত্তান্ত এই। নোহ তাৎকালিক লোকদের মধ্যে ধার্ম্মিক ও সিদ্ধ লোক ছিলেন, নোহ ১• ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন। ১০নোহ শেম, ১১ হাম ও যেফৎ নামে তিন পুত্রের জন্ম দেন। ১১তৎকালে পৃথিবী ঈশ্বরের সাক্ষাতে ভ্রষ্ট, পৃথিবী দৌরাত্ম্যে ১২ পরিপূর্ণ ছিল। ১২আর ঈশ্বর পৃথিবীতে দৃষ্টিপাত কারলেন, আর দেখ, সে ভ্রষ্ট হইয়াছে, কেননা পৃথিবস্থ সমুদয় প্রাণী ভ্রষ্টাচারী হইয়াছিল।

১৩তখন ঈশ্বর নোহকে কহিলেন, আমার গোচরে সকল প্রাণীর অন্তিমকাল উপস্থিত, কেনন। তাহাদের দ্বারা পৃথিবী দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ হইয়াছে; আর দেখ, আমি পৃথিবীর সহিত তাহাদিগকে বিনষ্ট করিব। ১৪তুমি গোফর কাষ্ঠ দ্বার এক জাহাজ নির্ম্মাণ কর। সেই জাহাজের মধ্যে কুঠরী নির্ম্মাণ করিবে, ও তাহার ১৫ ভিতরে ও বাহিরে ধূনা দিয়া লেপন করিবে। ১৫এই প্রকারে তাহ নির্ম্মাণ করিবে। জাহাজ দীর্ঘে তিন শত হত, প্রস্থে পঞ্চাশ হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত ১৬ হইবে। ১৬আর তাহার ছাদের এক হাত নীচে বাতায়ন প্রস্তুত করিয়া রাখিবে, ও জাহাজের পাশ্বে দ্বার রাগিবে; তাহার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তাল নির্ম্মাণ ১৭ করিবে।

১৭আর দেখ, আকাশের নীচে প্রাণবায়ুবিশিষ্ট
যত জীবজন্তু আছে, সকলকে বিনষ্ট করশীর্থে আমি পৃথিবীর উপরে জলপ্লাবন আনিব, পৃথিবীস্থ সকলে ১৮ প্রাণত্যাগ করিবে।

১৮কিন্তু তোমার সহিত আমি আপনার নিয়ম স্থির করিব; তুমি আপন পুত্রগণ, স্ত্রী ও পুত্রবধূদিগকে সঙ্গে লইয়া সেই জাহাজে প্রবেশ ১৯ করিবে। ১৯আর মাংসবিশিষ্ট সমস্ত জীবজন্তুর স্ত্রীপুরুষ যোড়া যোড়া লইয়। তাহীদের প্রাণরক্ষার্থে আপনার ২• সহিত সেই জাহাজে প্রবেশ করাইবে; ২০সর্ব্বজাতীয় পক্ষী ও সর্ব্বজাতীয় পশু ও সর্ব্বজাতীয় ভূচর সরীস্বপ যোড়া যোড়। প্রাণরক্ষার্থে তোমার নিকটে প্রবেশ ২১ করিবে। ২১আর তোমার ও তাহদের আহারার্থে তুমি সর্ব্বপ্রকার খাদ্য সামগ্রী আনিয়া আপনার নিকটে ২২ সঞ্চয় করিবে। ২২তাহাতে নোহ সেইরূপ করিলেন, ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারেই সকল কর্ম্ম করিলেন।

আর সদাপ্রভু নোহকে কহিলেন, তুমি সপরিবীরে জাহাজে প্রবেশ কর, কেননা এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সাক্ষাতে তোমাকেই ধার্ম্মিক ২ দেখিয়াছি। তুমি শুচি পশুর স্ত্রীপুরুষ লইয়। প্রত্যেক জাতির সাত সাত যোড়া, এবং অশুচি পশুর স্ত্রীপুরুল ৩ লইয়। প্রত্যেক জাতির এক এক যোড়া, এবং আকশের পক্ষীদিগেরও স্ত্রীপুরুষ লইয়া প্রত্যেক জাতির সাত সাত যোড়া, সমস্ত ভূমণ্ডলে তাহদের বংশ ৪ রক্ষার্থে তাiপনার সঙ্গে রাখ। কেননা সাত দিনের পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিবারাত্র বৃষ্টি বর্ষাইয়। আমার নির্ম্মিত যাবতীয় প্রাণীকে তুমণ্ডল হইতে ৫ উচ্ছিন্ন করিব। তপন নোহ সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে সকল কর্ম্ম করিলেন।

নোহের ছয় শত বৎসর বয়সে পৃথিবীতে জলপ্লাবন ৭ হইল। জলপ্লাবনের অপেক্ষাতে নোহ ও তাহার পুত্রগণ এবং তাহার স্ত্রী ও পুত্রবধূগণ জাহাজে প্রবেশ ৮ করিলেন। নোহের প্রতি ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে শুচি ৯ অশুচি পশুর, এবং পক্ষীর ও ভূমিতে গমনশীল যাবতীয় জীবের স্ত্রীপুরুষ যোড়া যোড়ী জাহাজে নোহের নিকটে ১• প্রবেশ করিল। ১০পরে সেই সাত দিন গত হইলে ১১ পৃথিবীতে জলপ্লাবন হইল। ১১নোহের বয়সের ছয় শত বৎসরের দ্বিতীয় মাসের সপ্তদশ দিনে মহাজলধির সমস্ত উনুই ভাঙ্গিয়া গেল, এবং আকাশের ১২ বাতায়ন সকল মুক্ত হইল; ১২তাহাতে পৃথিবীতে চল্লিশ ১৩ দিবারাত্র মহাবৃষ্টি হইল। ১৩সেই দিন নোহ, এবং শেম, হাম ও যেফৎ নামে নোহের পুত্রগণ, এবং তাঁহাদের সহিত নোহের স্ত্রী ও তিন পুত্রবধু জাহাজে প্রবেশ করিলেন। ১৪আর তাহদের সহিত সর্ববজাতীয় বহু পশু, সর্ব্বজাতীয় গ্রাম্য পশু, সর্ব্বজাতীয় ভূচর সরীস্বপ জীব ও সর্ব্বজাতীয় পক্ষী, সর্ব্বজাতীয় গেচর, ১৫প্রাণবায়ুবিশিষ্ট সর্ব্বপ্রকার জীবজন্তু যোড়া যোড়া জাহাজে নোহের নিকটে প্রবেশ করিল। ১৬ফলতঃ তাহার প্রতি ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে সমস্ত প্রাণীর স্ত্রীপুরুষ প্রবেশ করিল। পরে সদাপ্রভু তাহার পশ্চাৎ দ্বার বদ্ধ করিলেন।

5