পাতা:বাখতিন - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ওডেসার যথাপ্রাপ্ত পরিস্থিতিতে তার বীজ নিহিত ছিল। একজন জার্মান শিক্ষকের কল্যাণে তিনি মার্টিন বুবেরকীর্কেগার্দের রচনার প্রতি আকৃষ্ট হন। এত অল্প বয়সেও তার বিপুল পাঠ-অভিজ্ঞতা সবাইকে বিস্মিত করছে। এবছর টলষ্টয়ের মৃত্যু।
১৯১১...: মারাত্মক অস্থি-পীড়ার সূচনা যা তাকে সারা জীবন ধরে কষ্ট দেবে।
১৯১৩...: ওডেসার স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন মিখায়েল। এবছর নিকোলাই পিটাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্রুপদীবিদ্যা বিভাগে উচ্চতর পাঠ শুরু করেছেন।
১৯১৪...: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরু। মিখায়েল চলে আসছেন পিটার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসময় শহরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পালটে পেট্রোগ্রাদ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ভাষাতত্ত্ব শাখার ধ্রুপদীবিদ্যা বিভাগে মিখায়েল ভর্তি হচ্ছেন। তখন পিটার্সবুর্গের বৌদ্ধিক জীবনে নতুন নতুন আবর্ত তৈরি হচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম পূর্বসূরিদের চিন্তাপ্রণালীকে প্রত্যাহ্বান জানাচ্ছেন। ভবিষ্যবাদী সাহিত্য-আন্দোলন ও শিল্পভাবনা প্রতীকবাদের বিরোধিতা করছে। মায়াকোভস্কির কবিতার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন মিখায়েল। এসময় পেট্রোগ্রাদে টেনিয়ানোভ, আইখেনবাউম, স্কলোভস্কি প্রমুখ বিখ্যাত প্রকরণবাদী ভাবুকেরা উপস্থিত। কাব্যভাষা অধ্যয়নের জন্যে বিখ্যাত Opoyaz গোষ্ঠী উদ্ভূত হচ্ছে।
১৯১৬...: মিখায়েল পিটার্সবুর্গ রিলিজিয়াস-ফিলোসফিক্যাল সোসাইটিতে সদস্য হিসেবে গৃহীত হচ্ছেন। রুশ ঐতিহ্যের সঙ্গে বৃহত্তর ইউরোপীয় প্রেক্ষিত সম্পর্কে গভীর প্রীতি তৈরি হচ্ছে তাঁর। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্রুপদী ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক ফাজেই এফ জেলিনস্কির প্রভাব তার ওপর দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। বহু বাখতিনীয় চিন্তাবীজের উৎস জেলিনস্কির ভাবনায় খুজে পাওয়া সম্ভব। এবছর ভিয়াচোশ্লাভ ইভানোভের প্রবন্ধসংকলন Furrows and Boundaries প্রকাশিত হচ্ছে, যার কাছে মিখায়েল ঋণ স্বীকার করেছেন।
১৯১৭...: রাশিয়ায় লেনিনের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটছে।
১৯১৮...: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হচ্ছে। মিখায়েল বাখতিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ সাঙ্গ করছেন। এবছরের গোড়ায় নিকোলাই পেট্রোগ্রাদ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন; তাঁর প্রতিবিপ্লবী পর্যায় শুরু হচ্ছে। মিখায়েল তাঁর দাদার দীর্ঘায়ত ছায়া থেকে বেরিয়ে আসছেন। নিজস্ব ভাববৃত্ত রচনার সূচনা হচ্ছে। বছরের শেষে তিনি পেট্রোগ্রাদের তিন শ’ মাইল দক্ষিণে, নেভেল নামে ছোট্ট মনোরম শহরে, চলে যাচ্ছেন। ইতিহাসই দুই ভাইয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ এনে দিয়েছে। এবছর অভূতপূর্ব শীত সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকটকে ভয়াবহ করে তুলেছে।
১৯১৯...: ‘শিল্প ও প্রত্যুত্তরযোগ্যতানামক প্রথম প্রবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে দি ডে অফ আর্ট পত্রিকায়। সোভিয়েট রাশিয়ায় গৃহযুদ্ধ ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠছে। বিদেশি শক্তির আক্রমণে সামাজিক ভারসাম্য বিচলিত হচ্ছে। এই অস্থির পরিবেশে ম্যাক্সিম গোর্কির চেষ্টায় লেখক-গবেষক-বুদ্ধিজীবীদের জন্যে বিশেষ আশ্রয়স্থল গড়ে উঠেছে। খাদ্য-বস্ত্র-জ্বালানির যোগান পাচ্ছেন তাঁরা। কাগজের অভাবে প্রকাশনার ব্যবস্থা না হওয়াতে বিতর্ক ও মৌখিক প্রতিবেদনের ওপর গুরুত্ব
১৫