পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭০
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

টেনে নিয়ে চল্লো, দুজনেই আপনার মৃত্যু ডেকে আনলে। শিল্পের গতি কালে কালে নতুন নতুন শিল্পীর মতি ধরে চলেছে, কোনো এক কালের বা এক শাস্ত্রের মত ধরে' চলেনি, চলতে পারেও না। শিল্পশাস্ত্র মতো গড়ে’ সেকালে তারা ভাল গড়েছে সুতরাং আমরা একালেও সেই প্রাচীন মত ধরে গড়লে ভালই গড়বো এই কথাই স্থির জেনে যদিই বা ক্রিয়া করে’ চলি তবে সে কালের অনুকরণের কায ছাড়া কিছু বেশী গড়বে বলে মনে তো হয় না। আমাদের একালের তথাকথিত কালোয়াৎ তারা এটা প্রমাণ করছে। একালের শিক্ষা-সমস্যায় সেকালের টোলের পণ্ডিতের ব্যবস্থার কতকটা স্থান আছে সত্যি কিন্তু টোলের শিক্ষা-ব্যবস্থা ও কায চালানোর ধারাকে একালের শিক্ষা-সমস্যার সবখানি মেটাতে দিলে টোলও বিপদে পড়বে, বিশ্ববিদ্যালয়ও বিপদে পড়বে। আজ আমরা ঠিক শাস্ত্রমতো যদি কেউ মূর্তি গড়া শিখতে চাই তবে কিছুকাল আমাদের মূর্তি গড়া থেকে হাত গুটিয়ে বসে' থাকতে হবে; কেননা শাস্ত্রে লিখেছে— রাজা গেছে পণ্ডিতের কাছে মূর্তি গড়বার উপদেশ নিতে। রাজা বল্লেন— মূর্তি গড়ার উপদেশ করুন। পণ্ডিত বল্লেন—চিত্র-সূত্র থেকে ছবি আঁকার সম্বন্ধে আগে জান তো বুঝবে চিত্রকল্পে মূর্তি গড়ার উপদেশ যা আছে। রাজা চিত্র-সূত্রই আগে জানতে চাইলেন। পণ্ডিত তখন গম্ভীর হয়ে বল্লেন নৃত্য-সূত্র না জানলে চিত্র-সূত্র জানাই হবে না। রাজা নিরুপায়, নৃত্য-সূত্রই মঞ্জুর করলেন। পণ্ডিত আরো গম্ভীর হয়ে বল্লেন বাদন-সূত্র না জানলে নৃত্য-সূত্রের খেইটা ধরাই যাবে না। রাজা বল্লেন, তবে বাদনই চলুক। তখন পণ্ডিত গায়নের কথা তুল্লেন। ঠিকঠাক শাস্ত্রমতো মূর্তিগড়া শিখতে হ’লে গান থেকে আরম্ভ করে’ বাজনা নাচ ছবি আঁকা ও শেষ মূতি গড়াতে গিয়ে তারপর পাকা হতে হবে কাযে! আমাদের দেশে যেমন শিল্পশাস্ত্রকার তেমনি ইয়োরোপেও Silruvius একখানা বস্তুশাস্ত্র লিখেছেন বহুদিন আগে, দেউলী হতে হ’লে মানুষটাকে কি কি বিষয়ে পাকা হওয়া চাই তার তালিকা দিলেন–a knowledge of letters, of Drawing, of Geometry, of Arithmetic, of Optic, বেশ কথা, of History, of Natural and Moral Philosophy, of Jurisprudence, of Medicine, of Astrology, of Music and so on;– এর পরে যে সত্যই কিছু গড়তে আঁকতে এক কথায় কিছু করতে চায়