পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
শিল্পবৃত্তি
১৮৯

কায চলেছে মানুষের জীবনে, শিল্পী তার প্রবৃত্তি অনুসারে স্বাধীন ভাবে রচনা করে’ যাবার সুযোগ যদি পেয়ে যেতে। তবে কথাষ্ট ছিল না, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে সে যা তা গড়ে লিখে’ বলে’ কয়ে যেতে পারতো । কিন্তু নিয়মের দ্বারা বিধৃত এই বিশ্বসৃষ্টি, তার মধ্যে শিল্পীও ধরা পড়বে না, ছাড়া থাকবে, চলবে যেমন খুসি, প্রবৃত্তির বশে,—এ হ’তে পারলে না, বিশ্বপ্রকৃতি শিল্পীর মনকে ও কামকে তালো-ছায়ার রংএর রেখার সুরের ছন্দের নিয়মে বাধলে, পাগলের মতো সে যা তা খেয়াল নিয়ে থাকতে পারলে না । শুধু এই নয়, স্থান কাল সমাজ ধম, এক কথায় এক মানুষের প্রবৃত্তি অহা মানুষের প্রবুস্তির সংস্পর্শে এসে মুনিয়ন্ত্রিত হ’তে থাকলে, মন তরণের মনোহর রাস্ত। শিল্পী এবং শিল্প-রসিক দুয়ে মিলে প্রস্তুত করলে, ঠিক যে ভাবে মাটি ও জল ছয়ে মিলে নদীর খাত প্রস্তুত হয় সেই ভাবের ক্রিয় বশে শিল্পীর প্রবৃত্তি ও সাধারণের প্রবৃত্তির যোগাযোগ হ’ল । 釁 যেখানে শিল্পীর প্রবৃত্তির গতি তার আশপাশের দ্বারা আক্রান্ত ত’তে চল্লো, সেখানে বঁাধ ভেঙে বক্টলো শিল্পীর প্রাণের ধারা ; যেখানে আশপাশ তাকে সুন্দর চলতে দিলে দুই তটের মধ্য দিয়ে সহজ ও স্বাভাবিক ভাবে, সেখানে নদীতে মাটিতে ঝগড়া বাপলে না—নদী চল্লো মৃন্দর আঁকবাক পেয়ে নদীর দুই কৃলে শু্যামশোভা ছড়িয়ে দিয়ে ! শিল্পের মূলে রয়েছে শিল্প-বৃত্তির সঙ্গে জাতি ধম ইত্যাদির এই ভাবে সুন্দর মিলন, আর যেখানে ধম বল্লে শিল্পকে, ‘ধম-সঙ্গীতেষ্ট বদ্ধ থাক’ কিংবা ‘দেবতা গড়তে থাক’, সেখানে দেশ বল্লে, দেশের মধ্যেই তুমি বদ্ধ থাক’,—সেইখানেই বঁtধ ভাঙলো শিকল কাটলে –এই হ’ল সৃষ্টির নিয়ম শিল্পেরও নিয়ম। প্রবৃত্তির বশেই চলেছে মানুষের জীবন নানা বৃত্তি বেছে নিতে নিতে। কোনো কিছুতে প্রবৃত্তি নেই এমন জীব নেই জীবনও নেই । আহারে প্রবৃত্তি গেল মানুষটা উপবাসে রইলো, বাচার প্রবৃত্তি গেল সে গলায় দড়ি দিলে, ছবি অঁাকতে প্রবৃত্তি মানুযকে চিত্রকরের বৃত্তির দিকে নিয়ে গেল, পড়ার প্রবৃত্তি ছেলেকে পাণ্ডিত্যের দিকে, খাওয়ার প্রবৃত্তি ফলারের দিকে, ধনের প্রবৃত্তি চাকরি থেকে আরম্ভ করে’ জাল জুয়াচুরি যুদ্ধবিগ্ৰহ জমিদারি এবং রাজ্যলাভের দিকে নিযুক্ত