শিল্পে অধিকার
শিল্প লাভের পক্ষে আয়োজন কতটা দরকার, কেমন আয়োজনই বা দরকার, তার একটা আন্দাজ করে দেখা যাক্। রোমের তুলনায় গ্রীস এতটুকু; শিল্পের দিক দিয়েও গ্রীস রোমের চেয়ে খুব যে বড় করে আয়োজন করেছিল তাও নয়; শুধু গ্রীসের যতটুকু আয়োজন, সবটাই প্রায় শিল্পলাভের অনুকূল, আর রোমক শিল্পের জন্য যে প্রকাণ্ড আয়োজনটা করা হয়েছিল তা অনেকটা আজকালের আমাদের আয়োজনের মতো—বিরাটভাবে শিল্পলাভের প্রতিকূল। গ্রীস রোমের কথা ছেড়েই দিই, আজকালের ইউরোপও কি আয়োজন করে বসেছে তাও দেখার দরকার নেই, আমাদের দেশেই যে এতবড় শিল্প এককালে ছিল, এখনও তার কিছু কিছু চর্চা অবশিষ্ট আছে, সেখানে কি আয়োজন নিয়ে কাজ চলেছে দেখবো। এ দেশে প্রায় সব তীর্থস্থানগুলোর লাগাও রকম রকম কারিগরের এক-একটা পাড়া আছে। এই সহরের মধ্যেই এখনো তেমন সব পাড়া খুঁজলে পাওয়া যায়—কাঁসারিপাড়া, পোটোতলা, কুমরটুলি, বাক্সপটি ইত্যাদি। এই সব জায়গায় শিল্পী, কারিগর দুরকমেরই লোক আছে, যারা ওস্তাদ এক-এক বিষয়ে। ওস্তাদরা ঘরে বসে কাজ করছে, চেলারা যাচ্ছে সেখানে কাজ শিখতে—ঐ সব পাড়ার ছোট বড় নানা ছেলে! সেখানে ক্লাসরুম, টেবেল, চেয়ার, লাইব্রেরি, লেকচার হল কিছুই নেই, অথচ দেখা যায় সেখান থেকে পাকা-পাকা কারিগর বেরিয়ে আসছে—পুরুষানুক্রমে আজ পর্যন্ত! ছোটবেলা থেকে ছেলেগুলো সেখানে দেখেছি কেউ পাথর, কেউ রংতুলি, কেউ বাটালি, কেউ হাতুড়ি এমনি সব জিনিষ নিয়ে কেমন নিজেদের অজ্ঞাতসারে খেলতে খেলতে artist, artisan কারিগর শিল্পী হয়ে উঠেছে যেন মন্ত্রবলে। খেলতে খেলতে শিল্পের সঙ্গে পরিচয়, ক্রমে তার সঙ্গে পরিণয়—এই তো ঠিক্! পড়তে-পড়তে খাটতে-খাটতে ভাবতে-ভাবতে যেটা হয় সেটা নীরস জ্ঞান,—শুধু শিল্পের ইতিহাস, তত্ত্ব, প্রবন্ধ কিম্বা পোষ্টার ও পোষ্টেজ দেবার কাজে আসে। এই যে এক ভাবের শিল্পজ্ঞান একে লাভ করতে