পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
রূপ দেখা
২৭৯

পার্থীরা রাত্রির নীরব নীলের মধ্যে আপনাদের নিশ্চল পাখী মেলিয়ে নিঃশব্দে যেমন ভেসে যায় এ তেমন করে যাওয়া নয়—এ যেন একট। উন্মুক্ত দৈত্য চাকা-দেওয়া লোহার খাচাট পৃথিবীর বুক আঁচড়ে চারিদিকে অগ্নিকণা ছিটিয়ে অন্ধকুহরের ভিতর ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছে।” এই ভাবে চলার ফল তাe আমার নিজের কাছে ধরা পড়েছিল সেদিন যেদিন এই বর্ণনা লিখেছিলাম রেল-রাস্তার ; যথা-—“সুদীর্ঘ অনিদ্রা, অফুরন্ত অস্থিরতা, তার পরে বিরাট অবসাদ–নিজীব প্রাণ নিরুপায় অবোল। একটা জন্তুর মতো চুপ করে’ পড়ে’ আছে অপার অন্ধকারের মুখে छुट्टे চাখ মেলে’ ” রূপ দিলে বটে একটা—এই বাধা পথের একটানা ভাবে চল, কিন্তু সে হ’ল অবিচিত্র নিজিত রূপ, মুক্ত রূপ মুক্ত রেখার আনন্দ য। মালার মতো মনকে দোলায় তা এ লেখার মধ্যে ধরা গেল না ; কিন্তু গায়ের পথের মুক্ত রেখা ধরে চলতে চলতে এই গান যে কবি গাইলেন এর মধ্য দিয়ে মুক্তির স্বাদ আপন আপনি সহজে পৌছলে মনে ; যেমন-- “গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙা মাটির পথ আমার মন ভুলায় রে । ওরে—কার পানে মন হাত বাড়িয়ে লুটিয়ে যায় ধূলায় রে । ও যে—আমায় ঘরের বাহির করে, পায়ে পায়ে পায়ে ধরে -- কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে যায় রে কোন চুলায় রে ॥ ও সে—কোন বাকে কি ধন দেখাবে, কোন খানে কি দায় ঠেকাবে কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে ভেবেই ন কুলায় রে ॥” —রবীন্দ্রনাথ রেখামাত্র-শেষ যে চন্দ্রকলা সে যেমন পরিপূর্ণ রূপ ও রসের আধার, তেমনি পূর্ণিমার চন্দ্রমণ্ডল—রেখায় ঘেরা আলো করা রূপ—সেও রূপে রসে ভরপুর। কিন্তু এই যে খাতার একখানি পাতা যা রেল লাইনের মতো রেখার পর রেখা দিয়ে ভর্তি—সাদা কাগজে রুল টান৷