পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
স্মৃতি ও শক্তি
২৯৩

ছেলেখেলায় থাকে ছেলেটির অফুরন্ত কল্পনা, নতুন নতুন সমস্ত খেলার রূপ সে রচনা করে চলে কোন একটা পুর্বেকার খেলার স্মৃতি ধরে, ছেলে যে খেলে চল্লো সব সময়ে তা নয়, অপরূপ সমস্ত ব্যাপার কল্পনার দ্বারায় মূর্তিমান করে তুল্লে ছেলে। রূপদক্ষের মধ্যেও এই রকমের প্রবৃত্তি প্রবৃত্ত করায় তাকে নতুন নতুন সৃষ্টি করার দিকে । অসামান্ত শক্তি পেয়ে রূপদক্ষ সে রূপকল্পনায় দক্ষ হ’ল, আর যে, মানুষটি শুধু সামান্ত রূপ দখল করলে, রূপ কল্পনা করতে পারলে না—যেমন হাতী যেমন ঘোড়া যেমন মানুষ যেমন গাছ তেমনিই দেখিয়ে চল্লো,—সে হ’ল সামান্ত । রূপূকমী । সঙ্গীত এবং হরবোলার বুলি—স্বরের রূপ দুজন দুরকমে দিয়ে গেল,—একজন অসামান্তভাবে আর একজন সামান্য রকমে এমনি লেখার বেলায় কথা বলার বেলায় সামান্ত অসামান্ত ভেদাভেদ হ’ল রূপকল্পনার ক্ষমতা এবং রূপকল্পনা করার অক্ষমতার দিক দিয়ে । কবি র্তার একটা রূপকল্পনা আর যার কাছে শুধু কবিতা লেখার হিসেব আছে কিন্তু যে শক্তি নিয়ে মানুষ রূপকমে দক্ষতা পায় তা মোটেই নেই, এমন দুইজনের ছুটি রচনা পাশাপাশি ধরলেই এক রূপকমের অসামান্তত ও অন্তের সামান্ততা ধরা পড়ে। জলতরঙ্গ আনাড়ির হাতে বাজলো অর্থাৎ জলতরঙ্গের সঙ্গে মানুষটির নাড়ির সম্বন্ধ নেই, শুধু হাতের কৌশলের সম্বন্ধ রইলো এবং জলতরঙ্গ গুণীর হাতে পড়লো—বিষম তফাৎ হ’ল দুই বাজানোর মধ্যে, যেমন তরঙ্গের রূপকল্পনা ধরা হচ্ছে এক কবির লেখায়— ( তরঙ্গবtলাগণের গীত ) “মোরা তরঙ্গবালা পরি তরঙ্গমালা তরঙ্গে অঙ্গে ভঙ্গে করি গো খেলা । সমীরণ সঙ্গে তরঙ্গে তরঙ্গে (খেলি) করি নানা রঙ্গে লহরী লীলা ॥ শিকর সিঞ্চিত চন্দ্ৰমা-কিরণে সুষমা শোভিত তটিনী-পুলিনে কুলু কুলু তানে আকুল পরাণে ঢালি সুধাধারা নিবারি জালা।