পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৪৮
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

ভেদ, মাপেও ভেদ । হনুমানের যেলায় হ’ল সব হনুমানই সমান মুখপোড়া, মানুষের বেলায় নিয়ম একেবারে যতদূর ওলটাতে পারে—সাধারণ মাপ সমান রইলো, জাতি ধরে’ ও ব্যক্তি ধরে মানুষের মান পরিমাণ বয়সে বয়সে হ’ল অসমান। এক কাঠবেরালী পালালে রাতারাতি আর একটাকে খাচায় ভরে বুড়োকেও ঠকিয়ে দেওয়া চল্লে, কিন্তু এক মানুষ চেয়ার ছেড়ে সরে পড়লে সেই সে চেয়ারে অন্য একটি মানুষ এনে বসিয়ে আগের মানুষ বলে বালকফেও ঠকানো গেল না—পোষা কুকুর বেরাল তারাও ধরে ফেল্পে মাপের পার্থক্য মানুষে মানুষে রামের এক ডোল এক মাপ এক ভাব,—এখন রামও দুই হাত দুই পী এক মাথার মানুষ, শুামও তাই, এই মিলটুকুর জোরে অযোধ্যার সিংহাসনে বসেও শু্যাম বলতে পারে না আমি রাম,—রামের পরিমাপ সে রামেই শু্যামের পরিমাপ সে শু্যামেই নিঃশেষভাবে রইলো, রামের গুণ যদি পেলেন শু্যাম তো বহিরঙ্গীন মাপজোখের কথাই উঠলে না, প্রজার বল্লে রামরাজত্বেই বাস করছি। গুণের সমতা নিয়ে অন্তের সঙ্গে মিলে যাওয়া এবং ভাবের সমতা নিয়ে অন্তের সঙ্গে সমান হওয়া—এর প্রমাণ রূপস্থষ্টির অনেক জিনিষেই দিচ্ছে । চাদ আর চন্দ্ৰবদনে বা চন্দ্রহারে, খদ্যোতে প্রদীপে তারায়, নীল জলে পদ্মের মালায় আর নীল আকাশে দোতুল বলাকায় যে ভাবে সমান-নিজস্ব মান বজায় রেখেও কিন্তু দুটাে দেয়াশলায়ের কাঠি ঠিক সে ভাবে সমান নয়। & দর্পণে আমার প্রতিবিম্ব পড়লো—আমার সবই তাতে আছে অথচ আমার কিছুই তাতে নেই, সমান বলতে পারলেম না স্বয়ংরূপে আর তার প্রতিবিম্বে । অামারি তৈল-রঙ-করা প্রতিরূপ বা প্রতিচ্ছবি— আমার সব রইলো তাতে—ডেীল বর্ণ মান পরিমাণ, হ’লও ছবিটা জীবন্তবৎ—যেন বসে লেকচার দিচ্ছি, কিন্তু যে বস্তুটি বলছে আমার স্বয়ংরূপের অন্তরে থেকে “রইবো না বসে আমি চলবে বাহিরে” সেই সত্য ও নিত্য বস্তুটুকুই বাদ গেল প্রতিকৃতিতে, কাযেই ভেদ রইলো স্বয়ংরূপে রঙের সমতা পেয়েও। গোলাপ ফুলে আর গোলাপি আতরে কিন্তু প্রায় সমান সব দিক দিয়ে অসমান হ’য়েও । রূপে সমান কৃষ্ণনগরের ও লক্ষ্মেীয়ের মাটির আমটি অাতাটি কলাটি কিন্তু মাটির স্বাদ অাছে ফলের