পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৭০
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

সঙ্গীতে উপাদান উল্টে পাল্টে ভাবের প্রকাশ হয়,— যেমন সকালের ভৈরবী সন্ধ্যার পূরবী ; কিংবা গড়ের বাষ্ঠির মার্চ মুর দিয়ে সকাল। মুর দিয়ে সন্ধ্য, সুর নিয়ে যুদ্ধ। মূর্তি গড়ে এমনটা করা সহজ নয় তবু তাজমহলটা অনেককে বাড়ী না হ’য়ে নারী হ’য়ে দেখা দিয়েছে ! অলঙ্কারশিল্পে এর প্রমাণ জলতরঙ্গ চুড়ি ও সাড়ি, গঙ্গাজলি কাপড়— এমনি , কত কি জিনিষে বতর্মান । প্রতীক চিত্রেও এর নিদর্শন দেখি, যেমন পদ্মপত্রে জলবিন্দু জগৎ-সংসারের ভাবটা বোঝালে। এককে ভাব ভঙ্গি সব দিক দিয়ে অন্যের প্রতিম করা-এই হ’ল সোজা রাস্তা ভবিরাজত্বের, আর একটি রাস্ত হ’ল প্রতীকের রাস্তা—কাক দিয়ে বক বোঝানোর মতে একটা রাস্তা—য়াকে বলতে পারে ঘুরুণে রাস্তা। বাধা নেই কারু এই দুই পথেই চলার কিন্তু আর্টিষ্ট না হ’লে চলতে গিয়ে পদে পদে ঠকতে হয় এবং অপ্ৰযুক্তত নিহতার্থতা প্রতিকূলবর্ণতা প্রসিদ্ধিত্যাগ দূরান্বয় প্রকাশিতবিরুদ্ধত প্রভৃতি নানা অলঙ্কার-দোষে ঠেকতেও হয় । ভাবের আদান-প্রদানের সম্বন্ধ নিয়ে মিল্লেম রূপ সমস্তের সঙ্গে তবেই হ’ল যথাভাবে পাওয়া—আপনার করে পাওয়া কোনো কিছুকে, এই জন্ত অনেকে বলেছেন Art is love—আর্টের মূলে ভালবাসা । ভাব বুঝলেম তো ভাব হ’ল এবং তা থেকে ভালবাসাও জন্মালো, তখন তাকে নিয়ে ছবিই আঁকি, মূর্তিই গড়ি, কবিতা গান যাই করি—সেটি ভাল এবং ভাবের জিনিষ হ’ল এবং অন্তের কাছেও আদর পেলে রচনাটি। প্রথম আপন করে নেওয়া ভাব করে, তার পর সেটিকে সকলের আপন করে দেওয়া ভাবযুক্ত করে’—এই হ’ল কৌশল আর্টিষ্টের। আমার আপন যে হ’ল তোমারো আপন সে হ’ল—এই কৌশল আর্টের। মায় পড়ে যায় আমাদের অনেক জিনিষে কিন্তু যথার্থ ভাব হয় না। তাতে করে অনেক দিন যেখানে বাস যাদের সঙ্গে ঘরকন্ন মায়া পড়ে তাদের উপর—ভাব থাক বা নাই থাক কিছু আসে যায় না। অনেক বন্দীর কারাগারের উপরে একটা মায় পড়ে যায় অনেক দিন সেখানে বন্ধ থেকে, পোষা পায়রার মায় পড়ে যায় বিস্ত্রী খাচাটার উপর, কিন্তু এতে করে খাচার সঙ্গে ভাব হয়ে গেছে পায়রার তা জোর করে’ বলতে পারিনে, কেননা “অঘটনপটীয়সী মায়া”। yঈশ্বর গুপ্তের মায় পড়েছিল