সৌন্দর্যের সন্ধান
সুন্দরের সঙ্গে তাবৎ জীবেরই মনে ধরার সম্পর্ক, আর অসুন্দরের সঙ্গে হ’ল মনে না ধরার ঝগড়া। ইমারতে ঘেরা বন্দিশালার মতো এই যে সহরের মধ্যে এখানে ওখানে একটুখানি বাগান, অনেকখানিই যার মরা এবং শ্রীহীন, এদের পাখী প্রজাপতির মনে ধরেছে তবেই না এরা এই সব বাগানে বাসা বেঁধে এই ধূলোমাখা রোদে সকাল সন্ধ্যে ডানা মেলে সুরে ছন্দে ভরে’ তুলছে সহরের বুকের আবদ্ধ অফুলন্ত স্থানটুকু! আর এই সব বাগানের ধারেই রাস্তায় বসে’ খেলছে ছেলেরা—শিশুপ্রাণ তাদের মনে ধরেছে বাগানের ফুলকে ছেড়ে রাস্তার ধূলো মাটি, তাই তো খেলছে ওরা ধুলোকে নিয়ে ধূলোখেলা! রথের দিনে রথো সামগ্রী—সোলার ফুল পাতার বাঁশি—তার সুর আর রং আর পরিমল ছড়িয়ে পড়েছে বাদলার দিনে—রথতলার আর খেলাঘরের ছেলে বুড়োর মেলায়, তাই না আজ দেখছি নিজেদের ঘর সাজাচ্ছে মানুষ সোলার ফুলে মাটির খেলনায়! তেমনি সে আমার নিজের কোণটি, দেওয়ালের ফাঁকে ভাঙ্গা কাচের মতো এক খণ্ড আকাশ—ময়লা ঝাপ্সা প্রাচীরে ঘেরা চারটিখানি ঘাস চোর-কাঁটা আর দোপাটি ফুলের খেলাঘর, সবই মনে ধরেছে আমার, তাই না কোণের দিকে মন থেকে থেকে দৌড় দিচ্ছে, চোর-কাঁটার বনে লুকোচুরি খেলছে, নয় তো দোপাটি ফুলের রংএর ছাপ নিয়ে লিখছে ছবি, স্বপন দেখছে রকম রকম, আর থেকে থেকে ঠিক নাকের সামনে মাড়োয়ারিদের আকাশ বাতাস আড়াল করা তেতলা পাঁচতলা বাড়ীগুলোর সঙ্গে আড়ি দিয়ে বলে’ চলেছে বিশ্রী বিশ্রী বিশ্রী! মাড়োয়ারি গৃহস্থরা কিন্তু ওদের পায়রার খোপগুলোকে সুন্দর বাসা বলেই বোধ করছে এবং তাদের নাকের সামনে আমাদের সেকেলে বাড়ী আর ভাঙ্গাচোরা বাগানকে অসুন্দর বলছে! কাযেই বলতে হবে আয়নাতে যেমন নিজের নিজের চেহারা তেমনি মনের দর্পণেও আমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের মনোমতকে সুন্দরই দেখি। কারু কাছ থেকে ধার করা আয়না এনে যে আমরা সুন্দরকে দেখতে পাবো তার উপায় নেই। সুন্দরকে ধরবার জন্যে নানা