পাতা:বাঙলার তন্ত্র - পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেহটাকে শক্তি আরাধনার উপযোগী করিবার জন্য ব্রতপক্ষ হইতে সাধককে উদযোগ আয়োজন করিতে হয়। ব্ৰতপক্ষের বিধিনিষেধের মধ্যে পক্ষাকাল থাকিলে দেহগত বহু অসামঞ্জস্য নষ্ট হয় ; তাহার পর পিতৃপক্ষ বা তৰ্পণপক্ষ । দেবনিদ্রার কালে পিতৃগণ জাগিয়া থাকেন ; এ সময়ে দেবতার সাহায্যলাভ সুবিধাজনক নহে, অতএব পিতৃগণের আরাধনা করিয়া, তাহাদের কৃপায় কতকটা শক্তিসঞ্চয় করিতে পারা যায়। বিশেষতঃ তন্ত্র বলেন, শক্তিসাধনা করিতে হইলে, বংশের ধারা পবিত্র রাখিতে পারিলে অনেকটা সুবিধা হয় ; পিতৃকুল এবং মাতৃকুলের মধ্যে সিদ্ধ সাধক কেহ থাকিলে তঁাহার প্রভাবে সাধক অনেকটা অগ্রসর হইতে পারেন। কারণ, যে দেহ লইয়া সাধনা করিতে হইবে, যাহাদের কৃপায় সেই দেহ লাভ করিয়াছ, তাহাদিগকে আহবান করিতে পারিলে, তাহাদের আশীর্বাদে বহু বাধাবিঘ্ন দূর হয়। শক্তি আরাধনায় পিতৃগণই প্ৰধান অবলম্বন। তাই তৰ্পণপক্ষে পিতৃপুরুষগণকে পরিতৃপ্ত করিয়া, তাহাদের আশীৰ্বাদ মাথায় করিয়া দেবীপক্ষের প্রতিপদ হইতে মায়ের বোধন আরম্ভ করিতে হয়। তাই দেবীপক্ষের পূর্বেই পিতৃপক্ষ এবং পিতৃপক্ষের পূর্বেই ব্রতপক্ষ ; ব্ৰতপক্ষে এবং পিতৃপক্ষে সকল কর্তব্য সাধন করিতে পারিলে, তবে দেবীপক্ষে মায়ের আরাধণা করিবার অধিকার হয়। পূর্বে বলিয়াছি— যাহারা শাক্ত, তাহারা নবম্যাদি কল্প করিয়া থাকেন, অর্থাৎ পিতৃপক্ষের নবমী তিথি হইতে তাহারা বোধন বসাইয়া থাকেন; তাহারা এক মাস কাল দেবীর পূজা করেন। নবম্যাদি কল্পকে সাক্ষী বোধন বলে, অর্থাৎ তিলাজলিপরিতৃপ্ত পিতৃগণ উপস্থিত থাকিয়া এই কল্পের সহায়তা করেন ; তাহারা যেন দাড়াইয়া থাকিয়া কুণ্ডলিনীজাগরণের সুবিধা করিয়া দেন। বংশানুক্রমের প্রভাবে ( Heridity) এ দেহ ত তাহাঁদেরই, তঁহাদের পাপ পুণ্য, দোষ গুণ এবং অন্য বিশিষ্টতা সকলই এ দেহে সূক্ষ্ম ব৷ প্ৰকট ভাবে বিরাজ করিতেছে ; তাহার উপস্থিত থাকিয়া বোধনের সহায়তা করিলে মা আমার দেহঘটে। এবং বিশ্বঘটে স্বেচ্ছায় জাগিয়া বসেন ; তিনি জাগিলে আমার সকল সাধ পূৰ্ণ হয়, আমার সচ্চিদানন্দবিগ্ৰহ পরমাত্মস্বরূপের দর্শন হয়। এই জাগরণই দুর্গোৎসবের সাধনা, আসল পূজা, আসল আরাধনা। এই জাগরণ দেহভাণ্ডে এবং ব্ৰহ্মাণ্ডে ঘটে এবং পটে সাধন করিতে হয়। এই জাগরণই বোধন, এই জাগরণই আগমনী, এই জাগরণই প্ৰতিমার প্রাণপ্ৰতিষ্ঠা-দেবীর আগমন এবং নিৰ্গমন । প্ৰতি বর্ষে পঞ্জিকাতে লেখা থাকে যে, এবার দেবীর দোলায় 净输