পাতা:বাঙলার তন্ত্র - পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপূর্ব ও উপাদেয় গ্রন্থ। তন্ত্রের সৃষ্টিতত্ত্ব বুঝাইতে গেলে চণ্ডীর কথা স্বতঃই মনে পড়ে বলিয়া এইটুকু এইখানে বলিয়া রাখিলাম । S একটা মজার কথা এইখানে বলিব ! যাহারা পুরাণের আঠারোখানা বই পড়িয়াছেন, তাহারা বোধ হয় লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন যে, প্ৰত্যেক পুরাণের সৃষ্টিপ্রকরণ স্বতন্ত্র ; এক পুরাণের সৃষ্টিপ্রকরণের বিবরণ অন্য পুরাণের বর্ণনা হইতে অনেকটা পৃথক ! এ পার্থক্য কোন ঘটে ? সৃষ্টি যখন হইয়াছিল বা পরে যখন আবার হইবে, তখন একই পদ্ধতি অনুসারে হইয়াছিল, একই ক্রম অনুসারে হইবে। অধুনা কোন কোন পণ্ডিত বলিয়া থাকেন যে, অষ্টাদশ পুরাণ এক মহর্ষি বাদরায়ণ বেদব্যাসের রচিত ; তিনি ত্রিকালজ্ঞ ঋষি, তাহার মস্তিক্ষে মিথ্যার বিকাশ হইবার নাহে, সদাই সত্য প্ৰতিভাত হইত। তবে তাহার প্রত্যেক পুরাণের সৃষ্টিপ্রকরণ ভিন্ন রকমের কেন ? এই প্রশ্নের উত্তর আমি দুই রকমে দিব । পুরাণকর্তার উল্লেখ করিতে যাইয়া পুরাণষ্ট বলিয়াছেন। --ব্যাসাদিমুনিভিঃ বিচিতম- যাহা ব্যাস প্রমুখ মুনিদিগের রচিত, তাহাই পুরাণ। সুতরাং বুঝিতে হইবে, পুরাণসকল এক জনের রচিত নহে, বহুবচনাস্ত ‘ব্যাসাদিমুনিভিঃ’ বলাতেই স্পষ্ট বুঝাইতেছে যে, পুরাণসকলের কর্তা এক জন নহেন ; বহু মুনির দ্বারা উহ্য রচিত হইয়াছে ; তবে পুরাণকর্তাদের মধ্যে ব্যাস প্ৰধান । কিন্তু ব্যাস এক জন নহেন ; পুরাণ হইতেই জানিতে পারা যায় যে, আটাশ জন ঋষি ও মুনি ব্যাস উপাধি পাইয়াছিলেন ; বাদরায়ণ বেদব্যাস তাহাদের মধ্যে একজন। ব্যাস শব্দের অর্থ ব্যাখ্যাতা-বিভাগকর্তা ; যিনি শাস্ত্রের বিশ্লেষণ করিয়া শাস্ত্রমর্ম প্ৰকাশ করেন, তিনিই ব্যাস । সুতরাং ‘ব্যাসাদিমুনিভিঃ’ বলাতে তিনি যে, পুরাণকর্তা বাদরায়ণ ব্যাস, তাহা বুঝাইতেছে না। বাদরায়ণ বাস কোন একখানা পুরাণ রচনা করিলেও করিতে পারেন, নাও করিতে পারেন । কেবল ব্যাস শব্দ ব্যবহার করাতে বুঝিতে হইবে যে, আটাশ জন ব্যাস উপাধিযুক্ত মুনিদিগের মধ্যে অনেকে, অথবা সকলেই এবং আরও অন্য মুনি মিলিয়া মিশিয়া এই অষ্টাদশ পুরাণের রচনা করিয়াছিলেন। আরও একটা কথা ভাবিতে হইবে, পুরাণ ঋষিপ্রণীত নহে ; বিষ্ণুপুরাণে স্পষ্টই উল্লেখ করা আছে যে, পুরাণ মুনিবিরচিত। মুনি t