পাতা:বাঙলার তন্ত্র - পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

12>2a “s”<Estas মদ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা ও মৈথুন-ইহাই তন্ত্রসাধনার পঞ্চ মকার বা পঞ্চ তত্ব। মীলাবাদী বাবুর জিজ্ঞাসা করিয়া থাকেন যে, এই পঞ্চ তত্বের কি কোন আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা আছে, কোন esoteric অর্থ আছে, না উহা সোজাসুজি সাধারণ ভাবে বুঝিতে হইবে ? এই জিজ্ঞাসার সহিত এটুকু ইঙ্গিতও করা হয়, যেন সোজা অর্থে উহা বেজায় মন্দ, ধর্মের নামে পাপের প্রশ্ৰয় দেওয়া হয় ; উহা Black Art বা কালা বিদ্যা, বামমার্গ বা সজন সমাজের হেয় ব্যাপার। তন্ত্রগ্রন্থসকল পাঠ করিয়া আমাদের যাহা ধারণা হইয়াছে, তাহাতে ত আমরা বুঝি-পঞ্চ তত্ত্বের তিন প্রকারের প্রয়োগ আছে। (১) এক, মোটামুটি সোজাম্বজি অর্থ ; মস্থ্য, মাংস, মৎস্য, মুদ্রা ও মৈথুন বাহ পূজায় এবং স্কুল সাধনায় উহার নিয়মিত প্রয়োগ আছে ; (২) মানস পূজায় উহার অর্থ স্বতন্ত্র নহে, তবে তাহা কাল্পনিক ব্যাপার মাত্র ; মনে মনে কল্পনা করিতে হইবে যে, আমি সাধক দেবীকে স্বরার সাগর, মাংসের পর্বত, মৎস্যের স্তৃপ, মুদ্রার সম্ভার দিতেছি এবং পদ্মিনী নারীর সহিত মৈথুন সাহায্যে কুণ্ডলিনীকে জাগরিতা করিতেছি ; (৩) ষটুচক্রভেদে পঞ্চ তত্ত্বের অর্থ স্বতন্ত্র, প্রয়োগও স্বতন্ত্র, উহার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা বা ইন্সটরিক অর্থ আছে। কিন্তু তন্ত্রের পদ্ধতিমত ষটুচক্ৰভেদ কয় জন করিতে পারে ? কিয় জন বাহিরের শক্তির সহায়তা ব্যতিরেকে কুণ্ডলিনীর উদ্বোধন ঘটাইতে পারে ? পারে নাসচরাচর হয় না বলিয়াই উহার সোজা অর্থ ধরিতে হয় । কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, ইহাতে লজ্জার বা সঙ্কোচের বিষয় কি আছে ? তন্ত্রধর্ম প্রচারের ধর্ম নহে, উহা গুপ্ত--গোপ্য সাধনার ধর্ম ; যাহার যেমন শক্তি, যাহার। যেমন অধিকার, তাহাকে তেমনই কর্মপদ্ধতি দেখাইয়া দিয়া তন্ত্র, জীবমাত্রেরই উদ্ধারের পথ প্রশস্ত করিয়া দিয়াছেন। তন্ত্ৰ ভাবের ঘরে চুরি করে না, ভিতরের পর্দা ও বাহিরের পর্দা রাখে না ; তুমি যেমন, তোমার প্রবৃত্তি যেমন, তেমনই সাধনপদ্ধতির ব্যবস্থা করিয়া থাকে । সুতরাং পঞ্চ মাকারে লজাবোধ করিবার ত কোন হেতু দেখি না।