পাতা:বাঙলার তন্ত্র - পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মায়ের বিরাগ জমিলেই উহা সংহত হইয়া যায়। তালিক, জীবনের সকল ব্যাপারে মায়ের তর্জনীহেলন দেখিতে পায়, তাই তান্ত্রিক সর্বাবস্থায় পরিতুষ্ট । একটা ইতিহাসের কথা এইখানে বলিয়া রাখিব :-রাজা রামমোহন রায় তান্ত্রিক সাধক ছিলেন, তিনি শৈব বিবাহ করিয়াছিলেন অর্থাৎ শক্তিসাধনা করিতেন। তিনি তন্ত্রের সিদ্ধান্ত অবলম্বন করিয়া নিরাকার উপাসনার পদ্ধতি প্ৰচলন করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন । মহানির্বাণতন্ত্রের গোড়ার কয়টা উল্লাসে, অনেকের বিশ্বাস-তিনি তাহার মনোমত অনেক কথা প্ৰক্ষিপ্ত করিয়াছিলেন । পরে কিন্তু শ্ৰীষ্টানী শিক্ষায় ও ভাবের বন্যায়। তন্ত্র ভাসিয়া গিয়াছিল । আবার ভাবের গতি ফিরিতেছে, তাই তন্ত্রের কথা অনেকে কহিতেছেন। এখনও একটু হিসাব করিয়া পাঠ করিলে তন্ত্রে অনেক প্ৰগাঢ় তত্বের কথা জানা যায়। বিশেষতঃ পুরাতন বাঙ্গালা এবং বাঙ্গালী জাতিকে বুঝিতে হইলে তন্ত্রের অনেক কথা বুঝিতেই হইবে। এই মানস পূজা বুঝিতে না পারিলে রামপ্রসাদ, দাওয়ান মহাশয়, নীলাম্বরপ্রমুখ সাধকগণের গানের কোন অর্থই ঠিকমত বুঝা যাইবে না। তাই মানস পূজার গোড়ার গোটা কয়েক মোটা কথার উল্লেখ করিয়া রাখিলাম। তন্ত্র যে কেবল বাহ্যিক পূজাপদ্ধতি নহে, ভক্তির আকর, তাহা মানস পুজার আলোচনা করিলেই বেশ জানা যায়। উহ। লম্পটের ধর্ম নহে, মূর্থেরও ধর্ম নহে। উহা জ্ঞানী পণ্ডিতের সাধনপদ্ধতি। অক্রেস্র মুক্তিপূজা s আমাদের বিশ্বাস এবং ঐতিহাসিক পণ্ডিতগণেরও মত এই যে, বুদ্ধদেবের জন্মের পূর্বে, বৌদ্ধ ধৰ্ম প্রচারের পূৰ্বে ভারতবর্ষের আর্য্য বৰ্ণাশ্ৰমীদিগের মধ্যে আধুনিক হিসাবের মূতিপূজার প্রচলন ছিল না। বৈদিক ধর্মের প্রাবল্যর যুগে দ্বিজাতি মাত্রেই যাগ যজ্ঞ করিতেন, গৃহে গৃহে অগ্নিহোত্রী বিরাজ করিতেন, বৈদিক কৰ্মকাণ্ডের প্রাধান্য সর্বব্যাপী হইয়াছিল । বৈদিক কর্মকাণ্ডে মূতিপূজা নাই, মীমাংসা শাস্ত্ৰে প্ৰতিমা নির্মাণের এবং প্রতিমা পূজার কোন পদ্ধতির উল্লেখ নাই। অনেকে অনুমান করেন যে, বৌদ্ধ ধর্ম ভারতবর্ষব্যাপী