পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্বপুরুষ। এই মতের সম্ভাব্যতা যথেষ্ট পরিমাণে থাকিলেও বস্তুপ্রমাণের অভাবে এখন পৰ্য্যস্ত অগ্রাহ হইয়া আছে। অধিকাংশ নৃতত্ত্ববিদের মতে ভারতে মানবের আগমন হইয়াছিল বাঙ্গিরের দেশ হইতে—নরাকার বানর হইতে কোন জাতির মানবের উদ্ভব এখানে হয় নাই। বাহিরের দেশ হইতে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্নু,পাতি ভারতে আসিয়াছে, ইহাদের মিশ্রণে ভারতীয় জাতি গঠিত হইয়াছে। 多 এই সকল জাতির মধ্যে যাহাদের চিহ্ন এখনও ভারতে পাওয়া যায়, তাহাদের মধ্যে সৰ্ব্বপুরাতন হইতেছে নিগ্রোমূলোদ্ভব নিগ্রোবটু-কোন প্রাগৈতিহাসিক সময়ে ইহারা আফ্রিকা হইতে আরব ও ইরাণ হইয়া বেলুচিস্তানের উপকূল ধরিয়া ভারতে প্রবেশ করে এবং পশ্চিমে, দক্ষিণে ও পূৰ্ব্বাঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে। পরে ইগরা বাঙল ও আসাম হইয়া মালয়, আন্দামান, প্রভৃতি দেশে ছড়ায় । ইহাদের বংশধরেরা কোন কোন দেশে অতি অল্পপরিসর স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে বাস করিতেছে, ভারতীয় ভাষায় এখন আর ইহাদের প্রভাবের চিহ্ন নাই । 驗 তারপর ঐ প্রাগৈতিহাসিক যুগেই আসে প্রোটো-অস্টলিয়েডগণ । ইহারা পালেস্তাইনের পথ ধরিয়া ভারতে প্রবেশ করে এবং সৰ্ব্বত্র ছড়াইয়া পড়ে। সমগ্র ভারতে এবং ব্রহ্ম, মালয় প্রভৃতি দেশে ইহাদের বংশধরদের দেখা যায় । প্রেটো-অষ্ট্রালয়েডগণ সমগ্র উত্তর ভারত জুড়িয়া সিন্ধু ও গঙ্গার তীরে উপনিবেশ স্থাপন করে । একদল নৃতত্ত্ববিদের মতে ইহার ইন্দোচীন বা চীনের দক্ষিণ পশ্চিম হইতে আসামের পথে ব্ৰহ্মপুত্রের গতি আশ্রয় করিয়া ভারতে প্রবেশ করে। আর একদলের মতে ইহাদের বাস ছিল ভারতের পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে এবং মেসোপোটামিয়া হইয়া ইহারা ভারতে প্রবেশ করে । যাহা হোক, এই জাতি এক বিশিষ্ট সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়িয়া তোলে এবং দূরপ্রাচ্যের দেশগুলিতে লইয়া যায় । সম্ভবতঃ, ইহারাই ভারতে জুম চাষের প্রবর্তন করে। ইহা ছাড়া, ধান, কলা, নারিকেল, সুপারি, আদা, হলুদ, লাউ, বেগুন, প্রভৃতিরও চাষ করিত। গৃহপালিতের মধ্যে ইহাদের ছিল মুরগী । হাতীকে পোষ মানাইয়া ইহার কাজে লাগাইত। কার্পাস হইতে স্থত কাটিয়া ইহার কাপড় বুনিত। ইহাদের গ্রাম শ্রী সভ্যতার ছাঁচ এবং মূল ভাষার শব্দ ও বৈশিষ্ট্য আৰ্য্য ভারতকে প্রভাবিত করিয়াছে । আনুমানিক খ্ৰীষ্ট পূর্ব ৩৫০০ শতকের পূৰ্ব্বে দ্রাবিড় জাতি ভারতে প্রবেশ করে। ইহারা প্রধানতঃ দুই শ্রেণীর ছিল—এক দীর্ঘ কপাল ভূমধ্যসাগরীয়, &