পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১১

যাহাদের বাস ছিল দক্ষিণ-পূৰ্ব্ব ইউরোপে, পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার আর এক ছিল হ্রস্ব কপাল, যাহাদের বাস ছিল এশিয়া মাইনরে এৰং যাহার। ছিল আমনিয়েড। অবশু ইহাদের মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় জাতিরাই প্রবল ছিল, ইছারা পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে এবং মুদূর বাঙলা দেশেও ছড়াইয়া পড়ে। ভূমধ্যসাগরীয় দ্রাবিড় ভতি ভারতে আসিয়া ইহাদের অনুবত্তী সমভাষিক আমেনিয়েডদের সহিত মিলিয়া দক্ষিণ পাঞ্জাব ও সিন্ধুপ্রদেশে বিরাট নাগরিক সভ্যতা গড়িয়া তোলে। এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ মোহেন্‌-জো-দাড়ে ও হরপ্পায় আবিষ্কৃত হইয়াছে এবং ইহার আনুমানিক কাল খ্ৰীঃ পূর্ব ৩২৫০–২১•• অদ বলিয়া নিদ্ধারিত হইয়াছে। এই সভ্যতার বিস্তৃতি যে গাঙ্গেয় প্রদেশ পৰ্য্যন্ত স্টুয়াছিল, তাহার বস্তুপ্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। মোহেনজোদাড়ে ও হরপ্পায় প্রাপ্ত বস্তুগুলি হইতে সে সময়কার সভ্যতার যে পরিচয় পাওয়া যায়, তাহ দেখিয়া মনে হয় যে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার কতকগুলি মৌলিক উপাদান এই আর্য্যেতর অষ্টিক ও দ্রাবিড় জাতি হইতে পাওয়া গিয়াছে । দ্রাবিড়দের পর আধাগোষ্ঠ ভারতে প্রবেশ করে। আনুমানিক খ্ৰীষ্ট পূর্ব ৩০ ০০ শতকে রুশ দেশের অন্তঃপাতী ইউরাল পৰ্ব্বতের দক্ষিণে ইউরোপ ও এশিয়া জুড়িয়া যে সমতল ভূমি বিদ্যমান সেখানে ইন্দো-ইউরোপীয় জাতি তাহাদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়িয়া তুলিয়াছিল । ইহাদের কতকগুলি উপজাতি পূৰ্ব্ব দিকে অগ্রসর হইয়া ইরাণে আসে এবং ইরাণ হইতে পাঞ্জাবের পথে ভারতে প্রবেশ করে । ইহাদের সহিত আৰ্য্য ভাষা সৰ্ব্বপ্রথম ভারতে প্রবেশ করে। ইন্দো-ইউরোপীয় গোষ্ঠির ভিন্ন ভিন্ন উপজাতি বিভিন্ন সময়ে ভারতে প্রবেশ করে ; ইহাদের বিভিন্নতার চিহ্ন ভারতের প্রাচীনতম আৰ্য্য ভাষার মধ্যে এখনও লক্ষ্য করা যায় । ইহাদের মধ্যে দুইটি প্রধান উপজাতির কথা অনুমান করা হইয়াছে – (১) নর্ডিক বা উত্তর দেশের দীর্ঘকায় শ্বেত বা গৌরবণ, হিরণ্যকেশ, নীলচক্ষু, সরল নাসিক ও দীর্ঘ কপাল, এবং (২) এলপাইন বা মধ্য ইউরোপীয় লঘুদেহ, পিঙ্গল বা কৃষ্ণকেশ ও হ্রস্ব কপাল জাতি। বাঙলা দেশের আর্ঘ্য ভাষী জনগণ এই হুম্বকপাল আলপীয় শ্রেণীতে পড়ে । আৰ্য্যদের আগমনের ফলে আর্য্যভাষা উত্তর ভারতে প্রসার লাভ করে ; প্রোটো-অস্ত্রালয়েড ও দ্রাবিড় উভয়েই আৰ্য্য ভাষা গ্রহণ করে। এই ত্রিবিধ জাতি ও তাহদের ভাষা মিলিত হইয়া এক নূতন জাতি ও নুতন ভাষা স্থাই করে—উত্তর ভারতের (ভারতীয় ) আৰ্য্য ভাষা-ভাষী হিন্দু। (ماهیت