পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মঙ্গল-কাব্যও ইহাদের সঙ্গে সঙ্গেই স্বষ্ট হইয়াছে। ইহাদেরও সংখ্যা কিছু কম নহে ; দৃষ্টান্ত স্বরূপ আমরা শ্ৰীকৃষ্ণবিজয়, গোবিন্দমঙ্গল, শ্ৰীকৃষ্ণমঙ্গল, প্রভৃতির নাম উল্লেখ করিতে পারি। এই রূপ চৈতন্ত-কাব্য সম্বন্ধেও বলা যায় যে, চৈতন্য বিধয়ক পদাবলীর সঙ্গে সঙ্গেই চৈতন্তমঙ্গল কাব্য রচিত হইয়াছে। এই রূপে শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব প্রভৃতি সকল সম্প্রদায়েরই নিজ নিজ দেবতার মঙ্গল-কাব্য আছে । কাজে কাজেই, একথা আমরা বলিতে পারি যে বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাস মঙ্গলকাব্য লইয়া আরম্ভ হইয়াছে। প্রাচীন বাঙলা সাহিত্যের রচনাকাল অধিক ক্ষেত্রেই অস্পষ্টরূপে লিখিত হইয়াছে ; অনেক ক্ষেত্রে আবার কোনও তারিখ দেওয়া হয় নাই। কাজেই কোনও কবিকে অবিসংবাদিতরূপে বাঙলার আদি কবি বলিয়া স্বীকার করায় নানারূপ গোলযোগের আশঙ্কা আছে । সর্বাপেক্ষা নিরাপদ এবং যুক্তিসঙ্গত উপায় হইতেছে এই যে, যে-সকল কবি এক একটি ধারা বা কাব্য-শাখা প্রবর্তন করিয়া গিয়াছেন, তাহীদের আমরা আদি কবির সম্মান দিতে পারি। এই হিসাবে চার-পাঁচজন কবির এই সম্মান লাভ করিবার অধিকার আছে। ১ আমুরা একে একে তাহদের বিষয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত इंहेन्द्र | কৃত্তিবাস ও রামায়ণ প্রাচীন বাঙালী কবিগণের মধ্যে কৃত্তিবাসই সমধিক প্রসিদ্ধ এবং জনপ্রিয় কবি ছিলেন । ইহার রামায়ণ এখনও বাঙলা দেশের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সমান আদর ও সম্মান লাভ করিতেছে। কিন্তু বাঙলা দেশের এই আদি কবির জন্মের তারিখ লইয়া নানা প্রকার মতভেদ রহিয়াছে। কৃত্তিবাস তাহার বিরাট রামায়ণ গ্রন্থের মধ্যে কোথাও তাছার সময় নির্ধারণের উপযুক্ত কোনও প্রসঙ্গের উল্লেখ করেন নাই। সৌভাগ্যক্রমে ৮হারাধন দত্ত ভক্তিনিধি মহাশয় ১৫০১ খ্ৰীষ্টাব্দে লিখিত বলিয়া বর্ণিত এক পুথি হইতে কৃত্তিবাসের একটি আত্মবিবরণ সংগ্ৰহ করিয়া প্রকাশ করেন। ইহার পর বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদের সংগৃহীত গ্রন্থের মধ্য হইতেও অনুরূপ একটি বিবরণ উদ্ধার করা হইয়াছে। কৃত্তিবাসের সময় নির্ণয়ে ইহাই আমাদের একমাত্র উপাদান। কিন্তু এই বিবরণে সুস্পষ্টভাবে কিছুই লিখিত হয় নাই বলিয়া একাধিক তারিখ নির্ণরণ করা সম্ভব झद्देब्रीटक्क । ই ৯