পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখিতে অতি পুরাতন এবং ইহার ভাষাও অতিশয় প্রাচীন বলিয়া বোধ হয়। এই উভয় কারণেই কৰিকে প্রাচীন মনে করা হইয়াছে। কারণ দুইটি তুচ্ছ মনে হইলেও এরূপ ক্ষেত্রে ইহাদের সাহায্যেই কাজ চালাইতে হইবে। অনেকে বলেন যে আনস্তের বাড়ি আসামে ছিল এবং সেখানে তিনি অনন্ত কন্দলী নামে পরিচিত । ইনি কামরূপবাসী ব্রাহ্মণ এবং ইহার অপর নাম ছিল রামসরস্বতী। তবে এগুলি প্রায়ই জনশ্রুতি হইতে সংগৃহীত, সত্যাসত্য নিধারণের । কোনও উপায় নাই। সম্ভবতঃ প্রাচীন বলিয়াই অনন্তের ভাষা অত্যন্ত দুরূহ এবং জুটিল। তবে ইহাতে যে একেবারেই রস নাই একথা বলা যায় না। দীনেশবাবুর গ্রন্থে উদ্ধ ত ংশ হইতে এই নমুনাটি পাঠ করলেষ্ট গ্রন্থের ভাষা সম্বন্ধে একটু ধারণা হইবে : রাঘবর ভাৰ্য্যাতে তোহোর ভৈল মন । তিথাল থাস্তাত জিহবা ঘর্ষণ দুশন ॥ হাতে তুলি কালকূট গিলিবাক ছাস । সপুত্র বান্ধবে পাপি হৈবি সর্বনাষ । অদ্ভুতাচাৰ্য্য নামধারী একজন একখানি রামায়ণ রচনা করিয়াছিলেন । ইহার প্রকৃত নাম নিত্যানন্দ ; শ্ৰীথণ্ডের এক ব্রাহ্মণবংশে ইনি জন্মগ্রহণ করেন । কাব্যের মধ্যে ইনি যে আত্মবিবরণী দিয়াছেন তাহা হইতে জানা যায় ষে কপি নিরক্ষর ছিলেন ; সতি বৎসর বয়সে যখন র্ত হার উপনয়ন হয় নাই তখন একদিন-- মাঘ মাসে শুক্লপক্ষে ত্রয়োদশী তিথি । ব্রাহ্মণবেশে পরিচয় দিলেন রঘুপতি ॥ প্রভুর কৃপা হইল রচিতে রামায়ণ । অদ্ভূত হইল নাম সেই সে কারণ ॥ কবি সম্ভবতঃ কালীর উপাসক ছিলেন ; তাই সীতাদেবীকে কালীর অবতার রূপে বর্ণনা করিয়াছেন। অদ্ভুত রামায়ণের পুথিতে অস্পষ্টভাবে যে তারিখ দেওল আছে তাহ গ্ৰন্থরচনার কি পুথি নকলের বুঝা যায় না। তথাপি কবিকে আন্দাজ ২•• বৎসর পূর্বের বলিয়া গ্রহণ করা যাইতে পারে! শ্ৰীযুক্ত নলিনীকান্ত ভট্টশালী মহাশয় অন্যান্য উপাদানের সহিত বারেন্দ্র কুলশাস্ত্র দীপিকার তুলনা করিয়া স্থির করিয়াছেন যে “অদ্ভুতাচাৰ্য্যকে মোটামুটি আকবরের সমসাময়িক বলিয়া ধরিয়া লওয়া যায় । কাজেই তিনি কৃত্তিবাস অপেক্ষা দেড়শত বৎসর পরবর্তী।” । অদ্ভূত-রামায়ণ এক সময়ে উত্তর ও পূর্ববঙ্গে যথেষ্ট প্রচলিত ছিল। কৃত্তিবাসের Vog