পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থটি অভিনব সন্দেহ নাই । কবির রচনায় পরিপক্ক ও উপাঙ্গেয় বর্ণনাশক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। নদীয়া জেলার মেটেরী গ্রামবাসী রামমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় পিতার আদেশে স্বগৃহে রাম-সীতার বিগ্রহ স্থাপন করিয়া ১৮৩৮ খ্ৰীষ্টাব্দে রামায়ণ রচনা করেন । কবি প্রতিভাবান ছিলেন সন্দেহ নাই ; তাহার কাব্যের অনেক অংশই সরস ও চিত্তাকর্ষক। ব্যঙ্গে কবির বিশেষ হাত ছিল । বৰ্ত্তমানে তাহার কাব্যের অনেক অংশ গ্রাম্য বলিয়া বাতিল হইয়। যাইতে পারে কিন্তু প্রাচীনকালে এই সকল অংশই আসর জমাইতে পারিত। এই গ্রন্থের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে হনুমান কবির অত্যন্ত প্রিয় ছিল। লঙ্কায় বন্দী অবস্থায় হনুমানের উক্তিটি আমরা উদ্ধৃত করিলাম : হনুমান কন মেরি বিবাহ না হয় । কন্যাদান করিবে রাবণ মহাশয় ॥ রাবণের কন্যা মোর গলে দিবে মালা । রাবণ শ্বশুর মোর ইন্দ্ৰজিত শালা। চারিদিকে হাসয়ে যতেক নিশাচর। কেহ বা ইষ্টক মারে কেহ বা পাথর ॥ হনুমান কন মোর বিবাহের কাজ নাই। এমন মারণ খায় কাহার জামাই ॥ একশত বৎসর পূর্বে বৰ্দ্ধমান জেলার মাড়-গামনিবাসী রঘুনন্দন গোস্বামী “রাম-রসায়ন’ নামে রামায়ণের এক অনুবাদ রচনা করেন । এই গ্রন্থে কবি বাল্মীকি এবং তুলসীদাসকে অনুসরণ করিয়াছেন এবং করুণ রসাত্মক সকল অংশগুলিই ৰাদ দিয়াছেন । কাব্যে সংস্কৃত ও হিন্দী ছন্দের নানারূপ ব্যবহার আছে । কবি সংস্কৃন্ত শদের প্রতি আকৃষ্ট হইলেও হিন্দী শব্দও বহু প্রয়োগ করিয়াছেন । রঘুনন্দনের রচনার নমুনা স্বরূপ নিম্নলিখিত পংক্তি কয়টি উদ্ধৃত করা হইল : এথা রঘুবর করিতে সমর সুখেতে মগন হষ্টয়া । অতি সুকোমল তরুণ লাকল পরিলা কটিতে আঁটিয়া ॥ শিরে অবিকল জটার পটল বঁধিলা বেঢ়িয়া বেঢ়িয়া । পরিলা বিকচ কঠিন কবচ শরীরে সুদৃঢ় করিয়া ॥ ><)ግ