পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিলেন। কিন্তু একে একে সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হইল। শেষে পার্বত বাগদিনীর বেশে শিবের ক্ষেত্রে গিয়া উপস্থিত হইলেন এবং সেখানে ধান ভাঙিতে ও মাছ ধরিতে লাগিলেন। শিব বাগদিনীর রূপে মুগ্ধ হইয় তাহাকে বিবাহ করিবার বাসন জানাইয় তাহার সঠিত মাছ ধরিতে লাগিলেন। বাগদিনী তাহার নিকট হইতে প্রেমের নিদর্শন স্বরূপ পিতলের অঙ্গুরী লইলেন এবং কৈলাসে চলিয়া গেলেন। মহাদেবও তাহার পিছনে পিছনে কৈলাসে ছুটিলেন । কৈলাসে পাবতী বাগদিনীকে অস্কুরী দিবার অপরাধে শিবকে ঘরে আমিতে দিলেন না । নারদের পরামর্শে স্বামীকে চিরদিন বশে রাখিবার মানসে তঁাচার নিকট শাখা পরিতে চাহিলেন । শাখা কিনিয়া দিবার সঙ্গতি শিবের নাট ; অভিমানে পার্বতী পিতৃগৃহে চলিয়া গেলেন । নারদ দুই পক্ষেই আছেন ; এখন তিনি শিবকে পরামর্শ দিতে লাগিলেন । শিব শাখার সাজিয়া হিমালয়ে গেলেন। সেখানে তখন দুর্গাপূজা ; পার্বতী শাখা দেখিয়া উল্লসিত হইলেন ও স্বামীকে এই ছদ্মবেশ সত্ত্বেও চিনিলেন এবং শাখার মূল্য জিজ্ঞাসা করিলেন । শিব ইষ্ঠার মূল্য আত্মসমর্পণ জানাইলে পার্বী তাহাকে পরনারীর প্রতি আসক্তি এবং অঙ্গুরীদানের জন্য অনন্ত নরকভোগের কথা বলিলেন । শিব ইহা স্বীকার করিয়া লইর বলিলেন যে, যে নারী স্বামীকে বৃদ্ধ, জড়, মূৰ্খ, অপদার্থ জানিয়াও একান্তভাবে তাহার সেব করে, সে-ই প্রকৃত পক্ষে সতী । পার্বতীর মনে অংশোনা দেখা দিল । যাহার স্বামী জগৎপুজ্য দেবাদিদেব মহাদেব, তিনি স্বামীকে দরিদ্রের জন্য লাঞ্ছনা দিয়াছেন ভাবিয়া পাৰ্বতার হৃদয় অনুতাপে দগ্ধ হইতে লাগি.া। লিন স্বামীকে ফিরিয়া পাইবার জন্য ব্যাকুল হষ্টলেন ; মিলনে সকল বিবাদের শেষ হইল, হর-পাপ ধী কৈলাসে ফিরিয়া গেলেন । শিবের এই কাহিনীর মধ্যে বহু উপকাহিনী পরদ ঠী কালে প্রবেশ করিয়াছে। এই সকল উপকাহিনীকেও পৌরাণিক এবং লৌকিক আখ্যা দেওয়া যায়। দক্ষযজ্ঞ পণ্ড করিবার পর শিব সতীর মৃতদেহ স্কন্ধে লইয়া উন্মাদের ন্যায় ত্রিভুবন মথিত করিয়া বেড়াইতেছিলেন। বিষ্ণু তখন স্বাষ্ট্র রক্ষা করিবার অভিপ্রযে স্বদর্শন চক্রের আঘাতে সতীদেহ খণ্ড খণ্ড করিয়া চতুদিকে ছড়াইয়া দিলেন। দেহটি ৫২ খণ্ড হইয়া ৫২টি বিভিন্ন স্থানে গৈয়া পড়িল এবং এক একটি পীঠস্থানের স্বাক্ট করিল। এই সকল পীঠস্থানের মাহাত্ম্যও শিয়ায়ন সহিত্যে আড়ম্বর সহকারে বর্ণিত হইয়াছে। বলা বাহুল্য, এই কাহিনীটি অর্বাচীন উপপুরাণ হইতে সংগৃহীত হইয়াছে। 8续