পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্মপালের অপদার্থ পুত্র তখন গৌড়েশ্বর। ব্যক্তিত্বহীন এই রাজাকে শিখণ্ডীর ন্যায় সম্মুখে রাখিয়া প্রধান মন্ত্রী মাহুষ্ঠা বা মহামদ নিজের ইচ্ছামত শাসনকার্য চালাইতেছিল। একদিন গৌড়েশ্বর হস্তীপৃষ্ঠে নগরভ্রমণে বাহির হইয়া দেখিলেন যে র্তাহার বিশ্বস্ত প্রজা সোম ঘোষ মন্ত্রীর চক্রাস্তে কারারুদ্ধ হইয়াছে। তিনি তৎক্ষণাৎ তাহাকে মুক্তি দিলেন এবং কর্ণসেনের উপর তাহাকে অজয় নদের তীরবর্তী ত্ৰিষষ্ঠীর গড়ের সামন্তরাজ নিযুক্ত করিলেন। সোম ঘোষ পুত্র ইছাইকে লইয়া সেখানে উপস্থিত হইলে কর্ণসেন মহাসমাদরে তাহার অভ্যর্থনা করিলেন । - এখানে থাকিয়া ইছাই শরীর চর্চা এবং অস্ত্রবিদ্যা শিক্ষা করিলেন। যৌবনকালে ইনি যে অসীম বিক্রমের অধিকারী হইলেন তাঁহাতে কয়েকজন মাত্র অন্তচরের সাহায্যে কর্ণসেনকে বিতাড়িত করিয়া নিজেই গড়ের মালিক হইলেন এবং ঢেকুর নামক স্থানটি সুরক্ষিত করিয়া সেখানে বসবাস করিতে লাগিলেন। যথাসময়ে গৌড়েশ্বরের কর্মচারী কর আদায়ের জন্ত তাহার নিকট উপস্থিত হইলে তিনি রাজস্ব প্রদানে অস্বীকার হইয়া তাহাকে দূর করিয়া দিলেন। ইহাতে অপমানিত এবং ক্রুদ্ধ হইয়া গৌড়েশ্বর ইছাই-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করিলেন। তিনি ঢেকুর আক্রমণ করিলে ইছাই-এর বিক্রম এবং কৌশলে পরাজিত হইলেন। কর্ণসেনের ছয় পুত্র এই যুদ্ধে নিহত হইল, পুত্রবধুরা সহমরণে গেল এবং রাণী শোকাবেগে আত্মহত্যা করিলেন । কর্ণসেন শোকে পাগলের মত হইয়া গিয়াছেন দেখিয়া গৌড়েশ্বর তাহার শুালিক রঞ্জাবতীর সহিত কর্ণসেনের বিবাহ দিতে ইচ্ছা করিলেন। কিন্তু রঞ্জার ভ্রাতা রাজমন্ত্রী মহামদ তাহার আদরের ভগ্নীর সহিত বৃদ্ধের বিবাহ অনুমোদন করিল না। গৌড়েশ্বর রাণীর সহিত যুক্তি করিয়া মহামদকে অন্তক্ৰ পঠাইয়াদিলেন এবং বিবাহ সম্পন্ন করিয়া কর্ণসেনকে সামন্তরাজ নিযুক্ত করিয়া ময়না নগরে প্রেরণ করিলেন। মহামদ ক্রুদ্ধ হইয়া ইহাদের মুখদর্শন করিবে না প্রতিজ্ঞা করিল। কিছুদিন পরে ভ্রাতার সংবাদের জন্য ব্যাকুল হইয়া রঞ্জা বহু অনুনয় বিনয় করিয়া কর্ণসেনকে গৌড়ে যাইতে স্বীকৃত করিলেন। কিন্তু গৌড়েশ্বরের রাজসভায় মহামদ ভগ্নিপতিকে অপমান করিল এবং ভগ্নিকে সন্তানহীনা বলিয়া বিদ্রুপ করিল। ভ্রাতার আচরণে ক্ষুব্ধা রঞ্জ পুত্র লাভের জন্ত বহু ঔষধাদি ব্যবহার করিলেন, কিন্তু কিছুতেই অভীষ্ট ফল লাভ করিতে সমর্থ হইলেন না । শেষে রামাই পণ্ডিতের পরামর্শে ধর্মঠাকুরের প্রসাদ লাভের জন্ত নানাবিধ কুছু সাধন আরম্ভ করিলেন। তাহার ব্যাকুলত দেখিয়া অনিচ্ছাসত্ত্বেও কর্ণসেন সম্মতি দিলেন এবং রঞ্জা শালে ভর দিয়া প্রাণত্যাগ করিলেন। র্তাহার নিষ্ঠ ও ভক্তি দেখিয়া ধর্মঠাকুর বিশেষ প্রীত হইলেন ; 电@