পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৰিল । পথে উজানী নগরের রাজাকে কমলেকামিনী দেখাইয় তাহার কষ্ট৷ জয়াবতীকে বিবাহ করিল। তারপর শাপান্তে সকলে স্বর্গে ফিরিয়া গেল । চণ্ডীমঙ্গল কাব্যকে আমরা বর্তমানে যে আকারে পাই, ইহা তাহার অাদি রূপ নছে । ছড়া বা ব্ৰতকথার মত অতি ছোট আকারেই ইহার আরম্ভ হইয়াছিল এবং কালের প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গেই ইহার আকার বাড়িতে বাড়িতে শেষে মুকুন্দ রামের হাতে ষোলপালার একটা পরিণত কাব্য-রূপ লাভ করে। কিন্তু এই শাখার প্রথম বা আদি কবি কে তাহ নিশ্চয় করিয়া বলিবার উপযুক্ত প্রমাণাদি নাই। অনেকে দ্বিজ জনাৰ্দনকেই আদি কবির সম্মান দিয়া থাকেন। জনার্দনের যে পুথি পাওয়া গিয়াছে তাহ খণ্ডিত ; ইহা হইতে কবির রচনাকাল পাওয়া যায় না। তবে ইহা একটা ছোট-খাট ব্ৰতকথার ন্যায় এবং ইহার ভাষাও ১৫০।৩০০ বৎসরের প্রাচীন হইতে পারে। এইজন্য জনাৰ্দন প্রাচীনতম না হইলেও প্রাচীন কবিদের অন্যতম বলা যাইতে পারে । খ্ৰীষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে লিখিত মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কাব্যে আমরা পাই— মানিক দত্তেরে আমি করিয়ে বিনয় । যাহা হৈতে হৈল গীত পথ পরিচয় ॥ বন্দি নু গীতের গুরু শ্ৰীকবিকঙ্কণ। কাজেই মুকুন্দরাম তাঁহার পূর্ববর্তী দুইজন কবির বন্দনা করিয়া গিয়াছেন। মানিক দত্তের স্বল্পপরিসর যে চণ্ডীমঙ্গল পাওয়া গিয়াছে তাহাতে কবির রচনাকাল নাই ; বাসস্থান মালদহের ফুলুরা গ্রাম । কবির রচনা বিশেষত্বহীন না হইলেও ইহাকে সাহিত্য বলা যায় না। শ্ৰীকবিকঙ্কণ হইতেছেন মাধবাচার্য চক্রবর্তী। কবি যে আত্মবিবরণী দিয়াছেন তাহাতে জানা যায় যে তিনি ১৫৭৯ খ্ৰীষ্টাব্দে গ্রন্থ রচনা করেন। আকবর বাদশাহের রাজ্যে সপ্তগ্রাম ও ত্রিবেণীর নিকটের গঙ্গাতটে তাহার বাসভূমি ছিল। মাধব প্রাচীন শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্ততম ; তাহার কাব্যে চরিত্র চিত্রণের মধ্যে যে রস স্থ? হইয়াছে তাহা বাস্তবিক মুগ্ধকর। মাধব চণ্ডীকাব্যের যে রূপ দিয়াছেন তাঁহাই পরবর্তী কবিদের আদর্শস্থল। র্তাহার কবিত্বশক্তির পরিচয় কয়েক পংক্তি উদ্ধত করিলেই বুঝিতে পারা যাইবে : দধিখান লইয়া হইল ভাড়ুর গমন । মৎস্তের পসারে গিয়া দিল দরশন ॥ \షి