পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাছোনী বসিছে মৎস্তের পসার লৈয়া কোলে । পসার হোতে মৎস্ত ভাড় বাছি বাছি তোলে। মৎস্ত ধরিয়া ডোমনীএ পাড়ে টানাটানি। কড়ি না দিয়া মৎস্ত লইয়া যাও কেনি ৷ ভাড় দত্তে বোলে ডোম বলিএ তোমারে। এত কাল মৎস্ত বেচ কর দেহ কারে ৷ ডেমনীএ বোলে ভাড় তুমি হও কে। করের লাগি ধরিবেক জো আতি হ এ যে | এই মুখে তুম্মি আম্মার মৎস্ত থাইবা । মোর সঙ্গে এখনে বীরের স্থানে যাইবা ॥ গালাগালি বাজিল বহুল হুড়াহুড়ি । কোমরে থাকিয়া তার পড়ে ভাঙ্গা কড়ি ॥ সকল দিক দিয়া বিচার করিলে মুকুন্দরাম চক্রবর্তই চণ্ডীমঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি । বর্ণনার বৈচিত্র্যে, চরিত্রগুষ্টির মাধুর্যে দামুস্তার কবিকে কেহই অতিক্রম করিতে পারে নাই। অনেকে বলিয়া থাকেন যে মুকুন্দরামের কাব্যে বীরচরিত্রের একান্ত অভাব। কালকেতু বাল্যকালে এবং যৌবনে শিকারের সময়ে যে বীরত্ব দেখাইয়াছিল, শত্রুর ভয়ে ধানের গোলার মধ্যে লুকান তাহার পক্ষে উপযুক্ত নহে। কিন্তু এ কথা ভুলিলে চলিবে না যে মুকুন্দরাম যে দেবীর মাহাত্ম্য প্রচার করিতেছেন, তাহার কৃপা ছাড়া কাহারও কোনও শক্তিই কার্যকরী হইবে না, ইহাই স্বতঃসিদ্ধ । কমলেকামিনীর গজভক্ষণও সৌন্দর্যবোধের অভাবে ঘটিয়াছে বলিয়া অনেকে মনে করেন ; কিন্তু মুকুন্দরামের অন্ত পথ ছিল না ; বর্ণনাকে শাস্ত্রসম্মত করিতে তিনি গজভক্ষণের উল্লেখ করিতে বাধ্য । মুকুন্দরামের আত্মবিবরণী হইতে জানা যায় যে তিনি ১৫৯৩-৯৪ খ্ৰীষ্টাব্দে গ্রন্থ আরম্ভ করেন এবং ১৬০৩ খ্ৰীষ্টাব্দে উহা সমাপ্ত করেন। জন্মভূমি দামুক্ত সম্বন্ধে কবি লিখিয়াছেন— কুলে শীলে নিরবন্ত কায়স্থ ব্রাহ্মণ বৈদ্য দামন্তীয় সজ্জনের স্থান । অতিশয় গুণ-বাড়া সুধন্ত দক্ষিণ পাড়া সুপণ্ডিত মুকবি সমান। ধন্য ধন্ত কলিকালে রত্নাকু নদের কুলে অবতীর করিলা শঙ্কর । Vo