পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রণাম করিয়া বীরে ভাড় নিবেদন করে সম্বন্ধ পাতায় খুড়া খুড়া। ছিড়া কম্বলে বসি মুখে মন্দ মন্দ হাসি ঘন ঘন দেয় বাহু নাড়া ॥ মুকুন্দরামের পরেও অনেক কবি চণ্ডীব মাহাত্ম্য কীর্তন করিয়া আসর জমাইবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। চট্টগ্রামবাসী মুক্তারাম সেন ১৭৪৭-৪৮ খ্ৰীষ্টাব্দে যে গ্রন্থ রচনা করিয়ছিলেন তাহকে একটি উন্নত ধরণের পাঁচালি* বলা যায়। র্তাহার ভ্রাতা ব্রজলালের গ্রন্থ মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দুর্গাসপ্ততৗসতী অবলম্বনে রচিত। দ্বিজ হরিরামের চণ্ডীমঙ্গলের প্রামাণিকতায় অনেকে সন্দেহ করিয়া থাকেন। র্তাহার রচনা প্রায় মাধবাচার্ষ্য এবং কবিকঙ্কণের অমুরূপ ইহাতে যথেষ্ট পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাওয়া যায় । রায় গুণাকর ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গলের প্রথম খণ্ডে চণ্ডীদেবীর মাহাত্ম্য কীর্তিত হইয়াছে ; কিন্তু সেখানে কালকেতুর কাহিনীর পরিবর্তে হরিহোড়ের বৃত্তান্ত বর্ণিত হুইয়াছে। ১৭৭৯-৮০ খ্ৰীষ্টাব্দে ভবানীশঙ্কর দাস জাগরণের পুথি ও চণ্ডীমঙ্গল গীত রচনা করেন ; ইহ সংস্কৃত শব্দে ভারাক্রান্ত । কবির সমাস গঠনের প্রতি একটি অহেতুক প্রতি দেখা যায় এবং হইলোৎপত্তি = হইল উৎপত্তি প্রভৃতি হস্তিকর সমাসের দৃষ্টাস্তে গ্রন্থটি পরিপূর্ণ। শিবচরণ সেনের গৌরীমঙ্গলম মার্কণ্ডেয় চণ্ডীর অনুসরণে লিখিত হইলেও কালকেতুর উপাখ্যান ইহাতে বর্ণিত হইয়াছে। ইহা ছাড়াও, কৃষ্ণজীবন মোদক, হরিশচন্দ্র বস্থ, হরিনারায়ণ দাস, রায়শঙ্কর দেব, বনদুল্লভ, জগন্নাথ, লালা জয়নারায়ণ প্রভৃতি রচিত বিভিন্ন নামের চণ্ডীমাহাত্ম্য প্রচারক গ্রন্থ দেখিতে পাওয়া যায় । মনস-মঙ্গল কাব্য মানুষের ধর্ম সম্পৰ্কীয় ইতিহাসে দেখা যায়, যাহা হইতে তাহার মনে ভয় অথবা বিস্ময়ের উদ্রেক. হইত, তাহাকেই সে দেবতা জ্ঞান করিত এবং নিজের কল্যাণ কামনায় তাহাকে সন্তুষ্ট রাখিতে নানা উপচারে তাহার পূজা করিত। এই সময়ে যেমন একদিকে মেঘগর্জন, বজ্রপাত ও বারিবর্ষণ তাহার বিস্ময় জাগাইয়াছিল, তেমনি অপরদিকে ব্যঞ্জ, সর্প প্রভৃতি হিংস্র প্রাণী তাহার মনে ভয়ের উদ্রেক করিয়ছিল &(t