পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন খ্যাতনামা কবিদের অনুসরণ এবং অনুকরণ মাত্র। এগুলি শুধু ‘মনসামঙ্গল' কাহিনীর জনপ্রিয়তারই সাক্ষ্য দেয়। ' ' কালিকা মঙ্গল-কাব্য বিদ্যা ও সুন্দরের প্রচলিত কাহিনীকে আশ্রয় করিয়! কালিকামঙ্গল কাব্য গড়িয়া উঠিয়াছে । তবে মূল কাহিনীর সহিত দেবী মাহাত্ম্য অন্যান্য মঙ্গলকাব্যে যেরূপ একাত্ম, কালিকামঙ্গলে সেরূপ দেখা যায় না । এই শাখার কবিদের মধ্যে কেহ দেবীকে, কেহবা কাহিনীকে প্রাধান্ত দিয়াছেন। ইহ কয়েকটি কারণেই ঘটতে পারে। ইহাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক সম্ভাব্য এবং ইতিহাস-সম্মত যাহা হইতে পারে তাঁহারই আমরা এখানে উল্লেখ করিতেছি । শিবের সহিত শক্তিও আর্যধর্মে প্রবেশ করিয়া এক নূতন রূপ লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহার এই কালিকারূপটি বিশেষভাবে তন্ত্রোক্ত গুহ সাধনার অঙ্গীভূত হওয়ায় বহুদিন সর্বসাধারণ্যে প্রবেশ লাভ করিতে পারে নাই। তাই প্রাচীন পুরাণাদিতে কালিকার বিশেষ উল্লেখ নাই। তারপর, যখন বাঙলাদেশে তান্ত্রিক সাধনা প্রসার লাভ করে, তখন কালিকা পূজাও প্রচলিত হয় এবং ভক্ত ও সাধকদিগের পরিতৃপ্তির জন্য এই দেবীরও মঙ্গলকাব্য রচনার প্রয়োজন দেখা দেয় । তখন ভক্ত কবি একটি প্রচলিত কাহিনী অবলম্বন করিয়া দেবীর মাহাত্ম্য প্রচারের চেষ্টা করেন । কিন্তু অন্যান্য মঙ্গলকাব্যে উপাখ্যান বা কাহিনী দেবীকে আশ্রয় করিয়া গড়িয়া উঠিয়াছে বলিয়া দেবীর সহিত তাহার ঘটনাবলীর ঘনিষ্ঠ যোগ স্থাপিও হইয়াছে দেখা যায়। কালিকামঙ্গলে দেবী-ই কাহিনীকে আশ্রয় করিয়া আপনার মাহাত্ম্য প্রচারের চেষ্টা করিয়াছেন বলিয়া সেরূপ ঘটিয়া উঠে নাই । বাঙলা বিদ্যা সুন্দরের কাহিনীতে বিদ্যাকে বধ মানের রাজকন্যা বলিয়া বর্ণিত হওয়ায় অনেকে ইহাকে একটি সত্য ঘটনা বলিয়া মনে করেন । ইহার মধ্যে ষে কোনও ঐতিহাসিক সত্য নাই এরূপ নহে , তবে তাহা বাঙলাদেশের কোনও কাহিনী নহে! ভারতচন্দ্রই কাহিনীটিকে ব্যক্তিগত আক্রোশের জন্য বধমান রাজ । পরিবারের সহিত যুক্ত করিয়া দেন। কথিত হয় যে আনুমানিক খ্ৰীষ্টীয় একাদশ শতাব্দীতে বিখ্যাত কাশ্মীরি পণ্ডিত ও কবি বিলহন গুজরাটের অনহিলপত্তনের কোনও রাজকুমারীর গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। ক্রমে উভয়ের মধ্যে প্রণয় সঞ্চারের ফলে র্তাহারা গোপনে গান্ধৰ্ব বিবাহে আবদ্ধ হন । পরে রাজকুমারীর সস্তান সম্ভাবনা ఉs