পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হওয়াতে রাজা সমস্ত জানিতে পান্ধিয়া বিলম্বনের প্রাণদণ্ডের আদেশ ছিলেন। বিলন তখন রাজাকে চেীর পঞ্চশিকা’ নামক পঞ্চাশটি অপূর্ব শ্লোক শুনাইয়া সন্তুষ্ট করিলেন। তখন রাজা উভয়ের বিবাহ দিয়া তাহদের রাজ্য হইতে দূরে পাঠাইয়৷ দিলেন। শ্লোকগুলির একটি মুখ্য ও একটি গৌণ এই দুইটি করিয়া অর্থ আছে । ভবিষ্ণুপুরাণের কোন কোন সংস্করণের ব্রহ্মখণ্ডে বিদ্যা-সুন্দরের যে কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে তাহাকে নিঃসন্দেহে প্রক্ষিপ্ত বলা যায় । কাজেই ইহাকে বাংলা কাহিনীর মূল বলিতে পারা যায় না। বররুচি নামক কবি সংস্কৃতে ষে কয়েকটি শ্লোক রচনা করেন তাহ অনেক বাঙালী কবিকে প্রভাবান্বিত করিয়াছে এবং অন্ততঃ একজন কবির নাম করা যায় যিনি ইহার ভাব এবং স্থলে স্থলে ভাষারও অনুকরণ করিয়াছেন ইনি বলরাম কবিশেখর। প্রাচীন সংস্কৃত কবি ভাসের রচিত ‘স্বপ্নবাসবদত্তার কাহিনীর সহিত বিস্তামুন্দর উপাখ্যানের অনেকটা সাদৃশু দেখা যায়। কে সর্ব প্রথম চৌর পঞ্চাশিকার শ্লোকগুলিতে কালিকা-মাহাত্ম্য আরোপ করিলেন, তাহা জানা যায় না। তবে উগ্র টাকাকার রাম তর্কবাগীশ তাহার কাব্যসন্দীপনী’ নামক টীকার প্রারস্তে বিদ্যাম্বন্দরের যে সংক্ষিপ্ত উপাখ্যান সংস্কৃত শ্লেকে বর্ণনা করেন, তাহাতেও ইষ্টদেবী কালিকা বলিয়াই কথিত। আবার মৈমনসিংহের কবি কঙ্ক বিদ্যাসুন্দরের কাহিনীর সাহায্যে সত্যপীরের মহাত্ম্য কীর্তন করিয়াছেন। কাজেই দেখা যাইতেছে যে কালিকাদেবী সহিত বিষ্ঠা-সুন্দরের কাহিনীর ধোগ-স্বত্রটি অত্যন্ত ক্ষীণ । ভক্ত-কবি যাহাকে লইয়। দেবীর মহাত্ম্য বর্ণনা করিয়াছেন, তাহাকে লইয়া গুপ্ত প্রেমের কাহিনী বর্ণনা করিতে গিয়া অনেক কবি অশ্লীলতা এবং কুরুচির নিম্নতম শ্রেণীতে নামিয়াছেন । কালিকামঙ্গলের লেখকদের মধ্যে নিম্নলিখিত কবিগণ অন্যতম :– কঙ্কের উল্লেখ পূর্বেই করা হইয়াছে। ইনি শ্রীচৈতন্তদেবের সম-সাময়িক ছিলেন । বিদ্যাসুন্দরের কাহিনী বর্ণনা করিলেও ইনি কালিকামঙ্গলের কবি নহেন, সত্যপীরের পাঁচালিকার। 3 দ্বিজ শ্ৰীধর নামক এক ব্যক্তি নাসিরুদ্দীন নসরৎ শাহের পুত্র ফিরোজ শাহের আশ্রয়ে থাকিয়া একটি বিদ্যা-মুন্দর কাব্য রচনা করেন । ইহা ১৬শ শতাব্দীর কথা এবং ইনিই এই শাখার আদি কবি বলিয়া অভিহিত । ভারত সম্রাট ঔরংঞ্জেবের রাজত্বকালে শায়েস্তা খাঁ যখন বাঙলার স্ববাদার, জখন কলিকাতার নিকটবর্তী নিমন্ত-গ্রামবাসী কৃষ্ণরাম দাস বিষ্ঠা-মুন্দর কাহিনী S