পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথাপি, অশ্লীলতার কথা বাদ দিলেও, ভারতচন্দ্রের কাব্যকে কৃত্রিম বলিয়া মনে হয় । ইহাতে আছে প্রচুর অলংকার শাস্ত্রের দৃষ্টান্ত, ভাষা ও ছন্দের ক্রীড়া নৈপুণ্য। কুমারহট্ট নিবাসী কবিরঞ্জন রামপ্রসাদ সেনের কালিকামঙ্গল কাব্য সম্ভবতঃ ভারতচন্দ্রের পরে রচিত হইয়াছে। কবি ভারতচন্দ্রের অশ্লীলতা গ্রহণ করিয়াছেন বটে, তথাপি তাহার কাব্যের নায়ক-নায়িকাকে সহজ ও স্বাভাবিক বলিয়া বোধ হয়। কিন্তু ভাষার দৈন্তে কবি ভারতচন্দ্রের নিকট সম্পূর্ণ পরাজিত বলিয়া তাহার এই বিদ্যা-মুন্দর কাব্য জনপ্রিয় হয় নাই। তথাপি তাহার রচনায় মাঝে মাঝে কাব্যের রস স্বষ্টি হইয়াছে দেখা যায় !— চট্টগ্রাম নিবাসী হয় । কবি প্রচলিত করিতেছেন— তীরে গুজব উঠে একে একশত। গল্প বাড়ে বড়ই আঠারমেসে যত ৷ দরজায় বসে কেহ মণ্ডলের ঠাট । পথের মানুষ ডেকে লাগাইছে হাট ৷ একশরা ভরা টিকা হুক চলে দুটা । পোয়াদেড় তামাকু টে কি কুটা ৷ হেসে কহে তোমরা শুনেছ ভাই আর । শুনিলাম এখনি আশ্চর্য সমাচার । হাত কাটা একটা মানুষ গেল কয়ে । চোরের সহিত নাকি ছিল দুটা মেয়ে। পূরম রূপসীতার স্বৰ্গ বিদ্যাধরী। নিধিরাম আচার্যের কালিকামঙ্গল ১৭৫৬৫৭ খ্ৰীগদে রচিত কাব্য রীতির অনুকরণ করিতে গিয়া কাব্যের প্রাণহানি খঞ্জন চকোর আর কুমুদ-কুরঙ্গ । নয়নে দেখিয়া তারা অপমানে ভঙ্গ । খঞ্জন উড়িয়া গেল, মৃগ বন মাঝে । চকোর চাদের আড়ে রছিলেক লাজে ৷ —ইহা গতানুগতিক “নখ শির” বর্ণনার রীতি। প্রাণরাম চক্রবর্তীর একখানি কাব্য পাওয়া গিয়াছে যাহাতে কবি পূর্ববর্তী কবি বলিয়া কৃষ্ণরাম, রামপ্রসাদ ও ভারতচন্দ্রের নাম উল্লেখ করিয়াছেন। কাজেই, তিনি ইহাদের পরবর্তী। ' ইহা ছাড়া, মধুসূদন কবীন্দ্র, ক্ষেমানন্দ ও বিশ্বেশ্বর দাসের কাব্যের উল্লেখ ՊՎց