পাতা:বাঙলা সাহিত্য পরিচয়-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপাদান স্বাহ পাওয়া যায় তাহা হইতে কিছুই জোর করিয়া বলা বলা যায় না ; ইহা যে কোনও বাশুব নরপতির প্রকৃত জীবনকাহিনী সে সম্বন্ধে সন্দেহ করিবারও যথেষ্ট অবকাশ রহিয়াছে। মীনমাথের কাহিনীতে পাওয়া যায় যে মহাদেব ক্ষীরোদ সাগরে টঙের উপর বসিয়ু যখন গৌরীকে মহাজ্ঞানের পরমতত্বসঙ্কেত বলিতেছিলেন, তখন মীননাথ মৎস্তরূপে টঙের নীচে থাকিয়া তাছা শুনিয়া লইলেন ; কিন্তু শেষে ধরা পড়িলে শিব অভিশাপ দিলেন যে তিনি এক সময়ে মহাজ্ঞান বিস্কৃত হইয়া যাইবেন । মহাদেব কৈকালে ফিরিয়া গেলে চারিজন সিদ্ধা যোগপথে বিচরণ করিতে লাগিলেন। মহাদেবের মুখে ইহাদের রিপুঞ্জয়ের খ্যাতি শুনিয়া গৌরী ইহাদের পরীক্ষা করিতে চাহলেন এবং গোরক্ষনাথ ব্যতীত সকলকেই অপদার্থ প্রমাণ করিলেন । কিন্তু বহুবার চেষ্টা করিয়াও গোরক্ষনাথকে কোনক্রমেই পরাজিত করিতে পারিলেন না ; গোরক্ষের হাতে তিনি বন্দী হইলেন। শেফু মহাদেবের আগমনে গৌরী মুক্তি পাইলেন । তখন মহাদেব এক কন্যাকে গোরক্ষের পত্নীত্ব বর দান করিলেন । গোরক্ষ তাহাকে গৃহে আনিয়া দুগ্ধপোষ্য শিশুর রূপ ধারণ করিলেন ; শেষে তাহার কাতরতা দেখিয়া পুত্রবর প্রদান করিয়া বকুলতলায় তপস্তা করিতে গেলেন। গোরক্ষ বকুলতলায় বসিয়া দেখিলেন যে কানুপা আকাশ পথে চলিয়া যাইতেছে। র্তাহাকে অসম্মান করিতেছে ভাবিয়া ক্রুদ্ধ হইয়া গোরক্ষ নিজের একপাটি জুতাকে তাহাকে বধিয়া আনিবার জন্ত পাঠাইলেন । কামুপা আসিয়া ক্রুদ্ধস্বরে বলিল যে, যে ব্যক্তি নিজ গুরুর হিতাহিত বিবেচনা করে না সে কোনও সম্মানের অধিকারী নছে ; গোরক্ষের গুরু মীননাথ কদলীর দেশে নারীর মোহে পড়িয়া জরাজীর্ণ ও মৃত্যুগ্রস্ত হইয়া রহিয়াছেন এবং তাছার আয়ূর আর মাত্র তিন দিন অবশিষ্ট রহিয়াছে। গোরক্ষনাথ বলিলেন যে কামুপার শুরু হাড়িপাও অমুরূপ অবস্থার ৰুছিয়াছেন ; মেহরিকুলের মহাজ্ঞানী রাণী ময়নামতীর পুত্র গোপীচাঁদ তাহাকে মাটির নীচে পুতিয়া রাখিয়াছে। এইরূপে পরস্পরের গুরুর সংবাদ লাভ করিয়া উভয়েই গুরুর উদ্ধার সাধন করিতে গেলেন । গোরক্ষনাথ ব্রাহ্মণবেশে কদলীতে গিয়া দেখিলেন যে উদ্দেশু সিদ্ধ হইবার উপায় নাই। তখন তিনি যোগীর বেশে বায়ুপথে সেখানে উপস্থিত হইলেন এবং এক বকুলতলায় বসিয়া রছিলেন। কিছুক্ষণ পরে একটি স্ত্রীলোক সেখানকার পুকুর হইতে জল লইতে আসিলে গোরক্ষ তাহার নিকট হইতে জানিতে পারিলেন বে মীননাথ দুই পাটরাণী এবং ষোলশত সেবিকা পাইয় ছেন । সেখানে যোগীবেশে প্রবেশ করা অসম্ভব ; নর্তকী স্ক্রিয় কেহ মীননাথের সাক্ষাৎ পায় না।