পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ অঃ। সরফরাজ খা । 〉63 নিতান্ত অভাব । সম্রাট মহম্মদ শাও এক্ষণে মন্ত্রিবর্গের ক্রীড়াপুত্তলিমাত্র, সুতরাং উৎকোচের মহিমাই বিশেষ প্রবল। সরফরাজ দিল্লী দরবারের নিজ উকীলের নিকট হইতে সমস্ত সংবাদ পাইলেন ; কিন্তু কৰ্ত্তব্য স্থির করিয়া উঠতে পারলেন না। আলিবর্দী গার বলক্ষয় করিবার অভিলাষে সুজার সময়ে বাঙ্গল হইতে বিহারে যে সকল সৈন্ত প্রেরিত হয়, তাহাদিগকে বঙ্গে প্রত্যাবর্তনের আদেশ দেওয়া হইল ; কিন্তু আলিবর্দীর আকর্ষণে কেহই সে আদেশ মান্ত করিল না। বিহারের পূর্ব হিসাবও সেই সময়ে চাহিয়া পাঠান হইয়াছিল। এত দূর অগ্রসর হইয়া আবার চিন্ত হইল। হাজির মনস্তুষ্টির জন্ত তাহার দৌহিত্রী রাজমহলের ফৌজদার আতাউল্লা খার দুহিতার সহিত নিজ পুত্রের পরিণয়-সম্বন্ধ উপস্থিত করিলেন। হিতে বিপরীত হইল। ইতিপূৰ্ব্বেই মির্জামহম্মদের (সিরাজের ) সহিত ঐ কন্যার সম্বন্ধ-বন্ধন হইয়া গিয়াছে, এই প্রস্তাব বড়ই অপমানজনক ইত্যাদি বলিয়া, হাজি ও তাহার উপযুক্ত পুত্ৰগণ তুমুল আন্দোলন উপস্থিত করিলেন। আলিবর্দী খার নিকট সংবাদ গেল, তিনি ত্বরায় সসৈন্তে আসিয়া উদ্ধার না করিলে, পরিবারে কলঙ্ক পশিবে ; দুবৃত্তি সরফরাজ বলপূৰ্ব্বক বিবাহ দিবেন। হাজি তাহার চিরাভ্যস্ত কৌশলে স্বকপোলকল্পিত বর্ণনাসংযোগে এককে সহস্ৰ করিয়া লিখিলেন। পাছে আলিবর্দী সম্পূর্ণ বিশ্বাস না করেন, উদ্দেশু বিফল হয়, ভাবিয়া পুত্র সইদ আহম্মদের স্বাক্ষরও চলিল । সরফরাজ খার পক্ষে বিপক্ষের মনোনয়ন চেষ্টা বিফল হইল ( ১ ) । । আলিবর্দী খাঁ এই সমস্ত ব্যাপার অবগত হইয়া, ভোজপুরের বিদ্রোহী জমিদারের দমনচ্ছলে সসৈন্তে পাটনা হইতে বহির্গত বইলেন ( ১১৫২ হিঃ,—১৭৪০ খৃঃ ) । গোপনে জগৎশেঠকে এক পত্র প্রেরিত হইল ; এই সঙ্গে সরফরাজ কে লিখিত আর এক পত্র ছিল । বিশ্বস্ত দূত হস্তে পত্র এই ভাবে প্রেরিত হইল, যেন আলিবর্দী রাজমহলে পৌছিলে পত্র মুর্শিদাবাদে জগৎশেঠের হস্তে প্রদত্ত হয়। হাজির জামাতা রাজমহলের ফৌজদার আতাউল্লা খার বন্দোবস্তে বিহার হইতে শাকুড়াগলি পৰ্য্যন্ত স্থান দিয়া কোন লোক বাঙ্গালী যাইতে পাইল না ; পাছে, এই সংবাদ পূৰ্ব্বে প্রচারিত হইয়া পড়ে। পাটনা হইতে কিয়দ রে উপনীত হইয়া আলিবর্দী থা প্রধান সামন্তবর্গকে সমবেত করিয়া, তাহার শত্রুর বিরুদ্ধে সকলেই প্রাণপণে সাহায্য করিবেন, এইরূপ শপথ করাইয়া লইলেন। ( ) তারিখ ইউসুফী।