পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

by 8 বাঙ্গলার ইতিহাস । ६१[ वः । হইয়াছিল ; সরফরাজ-পুত্র মির্জা আমানী ও অন্তান্ত আত্মীয়বর্গ রাত্রিযোগে নাক্ট-খালির বাটতে ( ) উহা সমাহিত করিয়া, নগররক্ষার বৃথা প্রয়াস পাইয়াছিলেন। আলিবর্দী খা নগর প্রবেশ করিয়া, প্রথমে সরফরাজ জননী জিন্নেতুন্নেসা বেগমের প্রাসাদের দ্বারদেশে উপনীত হইয়া, বিনয়নম্রবচনে তাহার নিকট কৃতাপরাধের জন্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন ; ভবিষ্যতে র্তাহীদের রক্ষার ভার গ্রহণ করিবেন, ইত্যাদিও জ্ঞাপন করা হইল। সেখানে কোনও উত্তর ন৷ পাইয়া, দরবারগৃহে প্রবেশ করিয়া সৰ্ব্বসমক্ষে সিংহাসন গ্রহণ করিলেন। সরফরাজচরিত্র-বর্ণনে ইতিপূৰ্ব্বে যাহা উল্লিখিত হইয়াছে, তাহাতে তারিখ বাঙ্গালা বা হলওয়েলের বর্ণিত চরিত্রহীনতা সমর্থন করা যায় না। গোলামহোসেন, ইউসুফ আলি খার কথাই গ্রহণ করিয়াছেন, ইহাই উক্ত উক্তির বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ। রাজকাৰ্য্যে অনভিজ্ঞতা ও অপরিণামদৰ্শিতা ভিন্ন সৰ্বফরাজের অন্ত দোষ প্রামাণিক নহে। তাহার ধৰ্ম্মপ্রবণতা একবাক্যে স্বীকৃত ; যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মত প্রাণবিসর্জন করিয়া, তিনি মনের বল দেখাইয়াছেন। আলিবর্দী খার কার্য্যসমালোচনায় ইউসুফ আলি বলেন, “আলিবর্দী খাঁর মত সৎস্বভাব, ধৰ্ম্মপরায়ণ, ধীরগষ্ঠীর প্রকৃতির লোকের হস্তে এইরূপে প্রভূহত্যা আশ্চর্য্যের বিষয় । এটি বিধিনিৰ্ব্বন্ধমাত্র বলা যাইতে পারে। কারণ, তিনি পরে স্বীয় শক্রবর্গের প্রতিও অসদ্ব্যবহার করেন নাই। চাটুকারগণের অন্তায় কাৰ্য্যের সমর্থন করা দূরে থাকুক, অবজ্ঞাই করিতেন।” নিরপেক্ষ লোকে এই ব্যাপারে হাজি আহম্মদেরই বিশেষ দোষ দেখিয়াছেন । আলিবর্দী আত্মরক্ষা প্রয়োজন বুঝিয়াই, প্রথমে পাটনা হইতে বহির্গত হন ; পরে ঘটনাচক্রে ও রাজপদের উচ্চাশায় তাহাকে কৰ্ত্তব্যপথভ্রষ্ট করিয়াছিল। হিতকারী প্রভুপুত্রের প্রাণহস্তার উপরে জনসাধারণের প্রথমতঃ স্বাভাবিক ঘৃণার সঞ্চারই হইয়াছিল। কালক্রমে আলিবর্দী খাঁর সৌজন্য, সহৃদয়ত, দয়াদাক্ষিণ্য এবং ঐকান্তিক প্রজাহিতৈষণায় আকৃষ্ট হইয়া সকলেই তাহার প্রতি সমধিক অনুরক্ত হইয়াছিলেন । ( ১ ) বৰ্ত্তমান শাহানগর থানার নিকটে নাক্টাখালি। সরফরাজের সমাধির উপর সম্প্রক্তি এক ক্ষুদ্র স্তম্ভ নিৰ্ম্মিত হইয়াছে।