পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ অঃ । উড়িষ্যায় মারাঠা । > と > রঘুজীর উড়িষ্যায় পদার্পণমাত্রই তিনি বন্দীভূত হইলেন ( )। নবাব তখন মুস্তাফার বিদ্রোহ লইয়া বিত্ৰত ; এ দিকে দৃষ্ট রাখিতে পারেন নাই। উড়িষ্যা অঞ্চল এত দিন মীর হবীব ও মহারাষ্ট্ৰীয় দলেরই হস্তে পড়িয়াছিল। এক্ষণে মীরজাফর থাকে তাহার পূর্বপদ সামরিকবিভাগের দেওয়ানী ব্যতীত উড়িষ্যার নায়েবী ও মেদেনীপুর এবং হিজলী অঞ্চলের ফৌজদারী অর্পণ করিয়া সসৈন্তে মহারাষ্ট্রীয়গণের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হইল। মীরজাফর র্থ এক্ষণে বহুদিন উচ্চপদের বেতন ভোগ করিয়া ক্রমশঃ প্রকৃত রাজ-জামাতার মত বিলাসী ও আলস্ত-পরতন্ত্র হইয়া পড়িয়াছিলেন । মেদিনীপুরের নিকটে সামান্ত একদল মহারাষ্ট্রীয় সৈন্তকে পরাভূত করিয়া তিনি কৰ্ম্মনাশা তীর পর্য্যন্ত অগ্রসর হইয়াই শিবিরসন্নিবেশ করিলেন। পরে রঘুজীর পুত্র জানজীর অধীনে মহারাষ্ট্রীয়গণ আগমন করিতেছে সংবাদ পাইয়া মেদেনীপুর রক্ষার আশা ত্যাগ করিয়া বৰ্দ্ধমানের দিকে আসিতে লাগিলেন। সেনাপতির এইরূপ সাহস দেখিয়া ক্ষিপ্রগামী মহারাষ্ট্রীয় দলের অগ্রভাগ বৰ্দ্ধমানের নিকটে তাহার কিয়দংশ দ্রব্যজাত ও কয়েকটি হস্তী অপহরণ করিল, এবং চতুর্দিকে অভ্যস্ত লুণ্ঠনকাৰ্য্য করিয়া বেড়াইতে লাগিল। আলিবর্দী খাঁ এই সংবাদ পাইয়া আতাউল্লা খাকে এক দল সৈন্ত সহ তাহার সাহায্যার্থ প্রেরণ করিলেন। মিলিত সৈন্ত বৰ্দ্ধমানের নিকটে মারঠাগণকে পরাভূত করিল। আতাউল্লা এতদূর কৃতিত্ব দেখাইয়৷ এক জন চাটুকার সামান্ত পরিচরের ভবিষ্যৎবাণীতে মুগ্ধ হইয়া রাজ্যভোগের সুখস্বপ্ন দেখিলেন ; মীরজাফর খাকে স্বপক্ষে আনয়ন করিয়া লঙ্কাভাগের পরামর্শ আটিতে বেশী সময় লাগিল না । মীরজাফর বন্ধুবর্গের অনুযোগে এই কল্পনা হইতে নিবৃত্ত হইয়াছেন, এমন সময়ে নবাব আলিবর্দী খাঁ সসৈন্তে নিকটে আসিয়া পহুছিলেন। মীরজাফর বগীদলের প্রতিরোধকরণে অক্ষম হইয়াছেন বলিয়া তিরস্থত হইলে অভিমানে কয়েক দিন নবাবের নিকট আসিলেন না। আতাউল্লাকে কৌশলে পদচ্যুত করিয়া মুর্শিদাবাদ পাঠান হইল। ভগিনীপতির মানভঞ্জনের কল্পনায় নবাব কয়েক দিন পরে মীরজাফরের কোন আত্মীয়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশের জন্ত তাহার শিবিরে যাইবার অভিপ্রায়ে বহির্গত হইলেন ; নিৰ্ব্বোধ মীরজাফর প্রত্যুদগমন ও সম্ভাষণ করিতে অগ্রসর (১) মুতাক্ষরীণ। বৎসরেক পরে নবাব তিন লক্ষ টাকা দিয়া প্রধান মন্ত্রীর ঘরের ছেলে স্বরে অনিয়া দেন।