পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVb- বাঙ্গলার ইতিহাস । ༤རྩི ཨ་ সঞ্জাত ভীষণ ক্রোধ কথঞ্চিৎ অপসারিত হইল। তৎপরেই বিজয়ী বঙ্গীয়সৈন্য পশ্চাতে ফিরিয়া মহারাষ্ট্রীয়গণকে আক্রমণ করিল, তাহারা বিদ্রোহীসৈন্যের পরাজয় লক্ষ্য করিয়া যুদ্ধ না করিয়াই পৃষ্ঠ দিল। নবাব বিদ্রোহীশিবির অধিকার করিলেন ও বহুমূল্য দ্রব্যজাত পুনঃপ্রাপ্ত হইলেন। সন্মান রক্ষণ হইল বলিয়া ভগবানকে ধন্যবাদ দিয়া বৃদ্ধ নবাব পাটনার দিকে অগ্রসর হইলেন ; আমেনার উদ্ধারসাধন হইল। বিদ্রোহিগণের হস্তে পাটনার যে বিষম ক্ষতি হইয়াছিল, যথাসাধ্য তাহার প্রতীকারচেষ্টা করিলেন ; হৃতসৰ্ব্বস্ব ব্যক্তিকে ও সন্ন্যাসীগণকে অর্থদানে তুষ্ট করা হইল। আফগানগণের মধ্যে যাহারা বশুত স্বীকার করিল, তাহীদের প্রতি সদস্লব্যবহারে লোকের হৃদয় আকৃষ্ট হইল। পাটনার স্থবাদারী প্রিয়তম সিরাজুদ্দৌলার নামে রাখিয়া, কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাহের জন্য কায়স্থ কুলতিলক মন্ত্রীবর জানকীরামকে তথায় রাখিয়া দিলেন। সইদ আহম্মদকে পূর্ণিয়ার ফৌজদারী প্রদত্ত হইল। সানন্দে নবাবীসৈন্য রাজধানী প্রত্যাবর্তন করিল। আতাউল্লা খ এই বিপ্লবসময়ে আফগান্দলে যোগদানের উদ্যোগ করিয়াছিলেন : তাহাকে বাঙ্গল ছাড়িয়া যাইবার আদেশ হইল। অযোধ্যার নবাবের যুদ্ধকার্য্যে আতাউল্লার পরে মৃত্যু ঘটে। জানজী মেদিনীপুরে প্রত্যাগত হইয়া সংবাদ পাইলেন, তাহার মাতা পরলোকগমন করিয়াছেন। সসৈন্ত মীর হবীবকে উড়িষ্যায় রাখিয়া তিনি স্বদেশযাত্রা করিলেন। আলিবর্দী খাঁ এই বর্ষে বর্গীগণ আর বঙ্গে পদার্পণ করিল না এই যথেষ্ট লাভ ভাবিয়া, এক দল সেনা তাহাদের গতিবিধি পৰ্য্যবেক্ষণ জঙ্গ বৰ্দ্ধমান অঞ্চলে রাখিয়া দেন। অতঃপর বর্ষাগতে ১১৬২ হিঃ (১৭৫০ খৃঃ) তাহাদিগকে কটক হইতে বিতাড়িত করিবার উদ্দেন্তে অমিততেজ বৃদ্ধ নবাব পুনরায় যুদ্ধসজ্জায় চলিলেন। নবাবীসৈন্ত পশ্চাদ্ধাবন করিলেই বর্গদল সরিয়া পড়িত ; পুনরায় অবসর বুঝিয়া দলে দলে দেখা দিত। নবাব প্রত্যাগমন করিলে উড়িষ্যা পুনরায় তাহদের করতলগত হইল। পরবর্ষে নবাব পুনরায় পূৰ্ব্বমত যুদ্ধসজ্জা করিলেন । এইরূপে এই দশবর্ষব্যাপী যুদ্ধবিপ্লবে আলিবর্দী খাঁ সৰ্ব্বপ্রযত্নে মহারাষ্ট্রীয়দলকে দেশ হইতে নিষ্কাষিত করিবার আয়োজন করিয়া বিফলমনোরথ হইলেন। সমস্ত বৎসর অবিচলিত উৎসাহে ও অদম্য সাহসে তাহাদিগকে নানাস্থান হইতে তাড়িত করিয়া বর্যাগমে রাজধানীতে প্রত্যাবৃত্ত হইতেন ; বর্ষাশেষে পুনরায় বগীদল দর্শন দিত।