পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ネ>8 বাঙ্গলার ইতিহাস । ৮ জা স্থান দিয়া নগর প্রবেশ করিল। দুর্গের উত্তর ও পূৰ্ব্বভাগে দেশীয় মহাজন প্রভৃতির আবাসস্থানসকল অর্থাৎ ভাগীরথীর তীর লইয়া, বড়বাজার পর্য্যন্ত সমস্ত স্থান তাহদের আয়ত্ত হইল। অপরাহে তাহারা বড়বাজারে অগ্নিসংযোগ করিয়া ভস্মীভূত করিল। আক্রমণকারী নবাব-সৈন্তের মধ্যে কয়েক জন ধৃত হইয়াছিল ; তাহদের নিকট ইংরেজগণ সংবাদ পাইলেন, পরদিন চতুর্দিক হইতে দুর্গের বহির্ভাগের তোপমঞ্চগুলি আক্রান্ত হইবে। সংবাদ শুনিয়া, বাগবাজার হইতে ইংরেজদলকে দুর্গে আনয়ন করা হইল, এবং সকলেই সশঙ্ক ভাবে—সোদ্বেগে রজনী যাপন করিতে লাগিলেন । দুর্গপ্রাকার হইতে কিয়দ রে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণের সদর রাস্তায় তিনটি তোপমঞ্চ নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। দুর্গদ্বার হইতে তিন শত গজ পূৰ্ব্বে এক তোপমঞ্চ স্থাপিত হয়, এখানে ৪টি কামান ছিল ; তাহার সম্মুখে কিয়দ রে জেলখানায়ও ঐরূপ সজ্জা ছিল। পরদিন অর্থাৎ ১৮ই জুন প্রাতে ৯টার সময়ে নবাবের বরকন্দাজ-সৈন্ত মারহাট্টাখাদ অতিক্রম করিয়া ঐ পথে অগ্রসর হইতেছিল ; ইংরেজগণের যুগপৎ অনলবর্ষণে ত্রস্ত হইয়া, তাহারা অন্ত দিকে সরিয়া পড়িল, এবং ক্রমশঃ তিনটি তোপমঞ্চই চতুর্দিক হইতে আক্রমণ করিল। (১ ) বৈকালে পূৰ্ব্ব-তোপমঞ্চের অধিনায়ক কাপ্তেন ক্লেটন তাহার সহকারী হলওয়েল সাহেবকে দুর্গমধ্যে অধ্যক্ষ সাহেবের নিকটে,—“আরও লোক এবং অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োজন, নতুবা ঐ স্থান রক্ষা করা অসাধ্য” ইত্যাদি জানাইবার জন্য পাঠাইলেন । কিন্তু হলওয়েলের প্রত্যাবর্তনের জন্ত আর কাপ্তেন সাহেব অপেক্ষা করিলেন না ; তিনটি কমানের ছিদ্র রোধ করিয়া পলায়নপর হইলেন। নবাবসৈন্ত মহোল্লাসে পূৰ্ব্ব-তোপমঞ্চ অধিকার করিল। অপর দুইটি তোপমঞ্চের রক্ষকদেরও ঐ দশ ঘটিল ; সকলেই কায়ক্লেশে দুর্গমধ্যে প্রবেশলাভ করিয়া হাফ ছাড়িলেন । নগরাক্রমণের প্রথম দিনেই বহির্ভাগের রক্ষকগণের ঐ অবস্থা দেখিয়া, দুর্গমধ্যে অনেকেই হতসাহস হইয়াছিলেন ; বাহিরের তোপমঞ্চগুলির উপর স্ববৃহৎ কামানের সহিত বৃহতী আশাও স্থাপিত ছিল। আৰ্ম্মানী ও ফিরিঙ্গী সথের সৈন্তগণের প্রাণভয়ে হৃৎপিণ্ড শুকাইল ; তোপমঞ্চের কামানগুলি ( ১ ) দেশীয় লেখকগণ ও সেক্রেটারী কুক্‌ ইংরেজপক্ষের আত্মরক্ষার উদ্যম বৃথাপ্রয়াস মাত্র বলেন। হলওয়েল ও অন্ম হইতে উক্ত বিবরণ গৃহীত হইল। সম্প্রতি মিঃ হিলের বিরাট পুস্তকে আরও অনেক কথা জানা যাইতেছে ।